বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঢাকা সহ খুলনা, রাজশাহী, সিলেট সহ সারাদেশ একযোগে পালিত হয় গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের ৭ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সোমবার (২৫ জুন) সকালে গ্রামীণফোন প্রধান কার্যালয় জিপিহাউসে প্রবেশের সময় সকল সহকর্মীকে চকোলেট দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিফলেট বিতরন করা হয় এবং জিপিইইউ এর শুভেচ্ছা বোর্ডে সবাই সিগনেচার করে জিপিইইউকে শুভেচ্ছা জানান। এরপর বিকেল ৪ টায় জিপি ম্যানেজমেন্ট ও জিপিইইউ নেতৃবৃন্দ যৌথভাবে আলোচনা সভা ও কেক কেটে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করেন।
বিকেলে জিপি হাউসের ময়দানে গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হকের সভাপতিত্বে এবং জেনারেল সেক্রেটারি মিয়া মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় গ্রামীণফোনের চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার সৈয়দ তানভীর হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন।
তিনি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মাধ্যমে গ্রামীণফোনের উত্তরোত্তর সাফল্য বৃদ্ধিতে জিপিইইউ এর সহযোগিতা আশা করেন এবং আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এমপ্লয়ীদের সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন এবং একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, জিপিইইউ এমন একটি ইউনিয়ন হবে যারা মেধা শ্রমিকদের কথা বলবে, কোম্পানির স্বার্থের কথা বলবে এবং কোম্পানিকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে।
জিপিইইউ সেক্রেটারি মিয়া মাসুদ বলেন, জিপি ম্যানেজমেন্ট ও আমরা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উভয় পক্ষই এখন একে অপরে আস্থাশীল। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে শ্রমিকদের চাকরির নিশ্চয়তা বিধানসহ সকল সমস্যা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মাতুজ আল কাদরী স্মৃতিচারণ করে বলেন, ২০১২ সালে ইউনিয়নের গঠনের পর থেকে নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে জিপিইইউ আজ যে সাত বছর পূর্ণ করেছে, তার সফলতার দাবীদার এর সকল সদস্যবৃন্দ।
জিপিইইউ এর নারী নেত্রী রোকসানা পারভীন বলেন, জিপিইইউ লিংগ বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং যেকোনো হয়রানির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে। জিপিইইউ চায় নারী বান্ধব অর্গানাইজেশন। তিনি বলেন, গ্রামীণফোনে নারীদের জন্য কর্মপরিবেশ অত্যন্ত প্রসংস্যাযোগ্য এবং তিনি তার ১৩ বছরের চাকুরী জীবনে কখনোই কোন সহকর্মীদের কাছ থেকে অপমানজনক কোন আচরণ পাননি।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ব্যাপক চাকরিচ্যুতির আশঙ্কা থেকে গ্রামীণফোনের কর্মীরা একতাবদ্ধ হয়ে চাকরির নিশ্চয়তার দাবিতে আইনি প্রক্রিয়া মেনে একটি ইউনিয়ন গঠন করে এবং নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। জিপিইইউ গঠন হয় ২০১২ সালের ১৪ জুন। ২৩ জুন নিবন্ধনের জন্য শ্রম পরিচালকের কাছে আবেদন করে সংগঠনটি।
রেজিস্ট্রেশনের দরখাস্ত দাখিলের পর শ্রম অধিদফতর তা প্রত্যাখ্যান করলে শুরু হয় আইনি লড়াই। অবশেষে সাত বছর ধরে শ্রম আদালত, শ্রম ট্রাইবুনাল এবং হাইকোর্টের আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই বছর ২০১৯ এর ৭ মার্চ ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন পায় জিপিইইউ; যার রেজিষ্ট্রেশন নম্বর বি-২২০১।
গত ৭ বছরে গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন কোম্পানির লভ্যাংশ হতে ৫ শতাংশ করে কর্মীদের প্রদানের দাবি আদায় সক্ষম হয়। ২০১৩ সালে ইউনি গ্লোবাল ইউনিয়নের ফ্রিডম ফ্রম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পায় সংগঠনটি এবং ২০১৫ সালে সংগঠনের অগ্রগতি ও সদস্যদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে ইউরোপভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনি গেøাবাল ইউনিয়নের বেস্ট অর্গানাইজিং অ্যাওয়ার্ডও পায় জিপিইইউ।
সবশেষে গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক সাত বছর জিপিইইউ এর সাথে থেকে সবধরনের সহযোগিতা করার জন্য সরকার, শ্রম মন্ত্রনালয়, জিপিইইউ এর সকল বর্তমান ও সাবেক সদস্যসহ সংশ্লষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। জিপিইইউ এর সকল সদস্যকে সৎ থেকে আরো দ্বায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করার মাধ্যমে আগামীতে আরো সাফল্য নিয়ে আশার ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।