মোবাইল ফোনে আসক্তি এক দশক ধরেই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে। সম্প্রতি এ–সংক্রান্ত একটি গবেষণা নিবন্ধ ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড অ্যাডিকশন’ শীর্ষক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে গবেষকেরা বলেছেন, বিভিন্ন আচরণগত কৌশল একত্র করলে স্মার্টফোনের ব্যবহার কমাতে একটি সম্ভাব্য এবং কার্যকরী উপায় বের করা যায়। গবেষকদের বের করা সেই ১০টি কৌশল জেনে নেওয়া যাক।
১. নোটিফিকেশন নিয়ন্ত্রণ: মোবাইল ফোন থেকে অপ্রয়োজনীয় সব নোটিফিকেশন (শব্দ, ব্যানার, ভাইব্রেশন) বাদ দিতে হবে।
২. সময় নির্ধারণ: কোন অ্যাপ কতক্ষণ ব্যবহার করবেন তার সময় আগে থেকেই নির্ধারণ করতে হবে। চাইলে স্মার্ট ফোনের পর্দা চালুর সময় নির্ধারণ করে নিতে পারেন।
৩. ঘুমের সময় স্মার্ট ফোন দূরে রাখুন: অনেকেই ঘুমের সময় মুঠোফোন কাছাকাছি রাখেন। এ অভ্যাস বাদ দিতে হবে। এ জন্য মুঠোফোন সাইলেন্ট বা ভাইব্রেশন বন্ধ করে ঘুমানোর জায়গা থেকে দূরে রাখতে হবে।
৪. স্মার্ট ফোনের পর্দা গ্রেস্কেল: আইফোন বা অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা মুঠোফোনে গ্রেস্কেল মোডে সুইচ অন করে রাখতে হবে। পর্দা সাদা–কালো থাকলে মুঠোফোনের আকর্ষণ কমে যায়, ফলে ব্যবহার কম হয়।
৫. সামাজিক যোগাযোগ অ্যাপ লুকানো: যারা ই–মেইল, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকের মতো অ্যাপ ব্যবহার থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারছেন না, তাঁরা চাইলে অ্যাপগুলো লুকিয়ে রাখতে পারেন। এ জন্য অ্যাপগুলো মুঠোফোনের হোম স্ক্রিন থেকে সরিয়ে আলাদা ফোল্ডার রাখতে হবে।
৬. স্মার্টফোন থেকে দূরত্ব বজায় রাখা: খুব বেশি প্রয়োজন না হলে মুঠোফোন দৃষ্টিসীমার বাইরে রাখতে হবে। প্রয়োজনে মুঠোফোন সাইলেন্ট করে পর্দার দিক নিচে রেখে কাজ করতে হবে।
৭. কঠিন আনলক পদ্ধতি: মুঠোফোনের আনলক পদ্ধতি কঠিন করতে হবে। প্রয়োজনে স্মার্ট ফোনের টাচ আইডি বা ফেইস আইডি সুবিধা বন্ধ রাখতে হবে। খোলার পদ্ধতি কঠিন হলে বারবার আনলক করে মুঠোফোন ব্যবহার করতে মন চাইবে না।
৮. উজ্জ্বলতা কমানো: ফোনের ডিসপ্লে সেটিংস থেকে স্মার্টফোনের উজ্জ্বলতা যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখতে হবে। এতে ফোনের নীল আলো কমবে এবং চোখের জন্য উপকার হবে।
৯. স্মার্টফোনের কাজ কম্পিউটারে করা: যে কাজ আপনি কম্পিউটারে করতে পারেন সেগুলো মোবাইল ফোনে করবেন না। এতে ব্যবহার ও আসক্তি কমবে।
১০. স্মার্টফোন রেখে বাইরে: যখন বাইরে যাবেন প্রয়োজন না হলে সঙ্গে স্মার্টফোন নেবেন না। যেমন কেনাকাটা বা ব্যায়াম করার সময় যতটা সম্ভব মোবাইল ফোন ঘরে রেখে যাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এতে ধীরে ধীরে প্রতি আকর্ষণ কমে যাবে।
কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, সামান্য কিন্তু কার্যকর এই পরিবর্তন আনা গেলে একাধারে যেমন স্মার্টফোন আসক্তি দূর হবে তেমনি বিষণ্নতার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা থেকেও মুক্তি মিলতে পারে। এ ছাড়া এতে একাকিত্ব দূর হয় ও ঘুমের সমস্যা দূর হয়। এই সহজ কৌশল মেনে চললে সহজেই মুঠোফোন আসক্তি থেকে দূরে থাকা যাবে।