গোপন ক্যামেরা যতই ছোট হোক তা লুকানো সহজ নয়। যেখানেই যান প্রথমে পরীক্ষা করে নিন কোথাও কোনো ক্যামেরা লুকানো রয়েছে কি না। এজন্য বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে আসবাব কিংবা দরজার হাতল, অদ্ভুতভাবে লাগানো ছবির ফ্রেম, ল্যাম্পশেড, দেয়াল ঘড়ির মধ্যে লুকোনো থাকতে পারে গোপন ক্যামেরা। ক্যামেরা লুকানোর আরেকটি প্রচলিত স্থান হলো টয়লেট।
এসব জায়গায় খেয়াল রাখার পাশাপাশি ক্যামেরা খুঁজে পেতে ভরসার জায়গা হয়ে উঠতে পারে প্রযুক্তিও।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যামেরা খুঁজে পাওয়ার একটি সহজ উপায় হলো অন্ধকারে উজ্জ্বল আলো ফেলা। ক্যামেরা যতই ক্ষুদ্র হোক, তাতে লেন্স থাকবেই। আর উজ্জ্বল আলো লেন্সে পড়লে তার থেকে নীল প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। খালি চোখে ধরা না পড়লে ব্যবহার করতে পারেন মোবাইল ফ্ল্যাশের আলো।
ঘরের কোথাও লুকানো ক্যামেরা থাকলে তার উপর মোবাইল ফোনের উজ্জ্বল আলো ফেললে, সেটি সবুজ বা লাল হয়ে জ্বলজ্বল করে।
গোপন ক্যামেরা খোঁজার অ্যাপও আছে ক্যামেরার নেটওয়ার্ককে চিহ্নিত করে এই ধরনের অ্যাপ। আবার অনেক সময়, ক্যামেরার অপটিক্যাল তারের জন্য ফোনের নেটওয়ার্কে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের সমস্যা দেখলে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে।
মোবাইলে ‘ফিং’ নামে একটি অ্যাপ ইনস্টল করা যায়। সেই মোবাইল ফোনটি দিয়ে ঘরে কাজ করা ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে লগ ইন করলেই, ওই ওয়াইফাইয়ের সঙ্গে আর কোন কোন যন্ত্র জুড়ে রয়েছে, তা টের পাওয়া যাবে। সেই তালিকায় ক্যামেরা থাকলে বোঝা যাবে, ঘরের বা বাড়ির কোথাও কোনও লুকনো ক্যামেরা রয়েছে।
অনেক সময় দুষ্ট মানুষ ট্রায়াল রুমে বা বাথরুমে এধরনের ক্যামেরা ব্যবহার করে। তাই এসব জায়গার আয়না ভালো করে পরীক্ষা করতে কাচের ওপর একটি আঙুল রেখে দেখুন। যদি দেখেন কাচের ওপর রাখা আঙুল আর আয়নায় দেখতে পাওয়া আঙুলের প্রতিফলনের মধ্যে সামান্য দূরত্ব রয়েছে, তাহলে বুঝবেন সব ঠিক আছে। কিন্তু যদি আয়নার ওপর রাখা আঙুল আর তার প্রতিফলনের মধ্যে কোনো দূরত্ব না থাকে, তাহলে বুঝতে হবে এক্ষেত্রে কোনো কারসাজি নিশ্চয়ই আছে! কেউ হয়তো আয়নার পিছনে ক্যামেরা লুকিয়ে রেখেছে!
এছাড়াও ট্রায়াল রুমে ঢুকে সব লাইট বন্ধ করে দিন। চারদিকে তাকিয়ে দেখুন ঘরের মধ্যে কোথাও লাল বা সবুজ আলোর বিন্দু দেখা যাচ্ছে কি না। যদি দেখা যায় তাহলে বুঝবেন যে সেখানে ক্যামেরা লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
আর ট্রায়াল রুমে ঢুকে আপনার মোবাইল থেকে কাউকে যদি কল করা যায় ও নেটওয়ার্ক থাকে তাহলে ওই ঘরে লুকানো ক্যামেরা নেই। আর যদি কল করা না যায় ও নেটওয়ার্ক হঠাৎ ডাউন হয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে সেখানে ক্যামেরা লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
কারণ গোপন ক্যামেরার সঙ্গে এক ধরনের ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল থাকে। সিগন্যাল ট্রান্সফার করার সময় এর ইন্টারফিয়ারেন্স হতে থাকে। যার জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক সেখানে কাজ করে না
তাই ব্যক্তগত মালিকানাধীন কোনও বাড়ি ভাড়া নিলে প্রথমেই সেই বাড়ির ওয়াইফাই বন্ধ করে দিলে ভাল। সে ক্ষেত্রে যদি বাড়ির মালিক যোগাযোগ করেন, এবং জিজ্ঞাসা করেন, কেন ওয়াইফাই বন্ধ করা হলো, তা হলে বুঝতে হবে বাড়ির কোথাও লুকানো ক্যামেরা থাকতেও পারে। সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই মালিক টের পেয়েছেন ওয়াইফাই বন্ধ।