থানায় না গিয়েই আগামীতে মাত্র তিনটি ক্লিক করেই ঘরে বসেই একজন নাগরিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারবেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মঙ্গলবার (২১ জুন) সারাদেশের প্রতিটি থানায় চালু হচ্ছে অনলাইন জিডি। অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিয়ে অনলাইন জিডি কারার এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী গণভবন প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতু (উত্তর) থানা ও পদ্মা সেতু (দক্ষিণ) থানার কার্যক্রম, বাংলাদেশ পুলিশের দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত ১২০টি গৃহ হস্তান্তর, পুলিশ হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় ১২টি পুলিশ হাসপাতাল, ছয়টি নারী ব্যারাক এবং অনলাইন জিডি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
বুধবার থেকে অনলাইন জিডি’র সাইট থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মোবাইল নম্বর ও জন্ম তারিখ লিখে অনলাইনে জিডি সাবমিট করা যাবে। এরপর পরিচয় নিশ্চিতের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে একটি কোড পাঠানো হবে মোবাইল নম্বরে। এই কোড দিয়ে নিজের জন্য নাকি অন্যের পক্ষে জিডি করবেন সেটি নির্বাচন করতে হবে। জিডির ধরণ এবং কী হারিয়েছেন অথবা খুঁজে পেয়েছেন তা নির্বাচন করতে হবে। কোন জেলার কোন থানায় জিডি করতে চান তা নির্বাচন করে, ঘটনার সময় ও স্থান লিখে ‘পরবর্তী ধাপ’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
সর্বশেষ অর্থাৎ তৃতীয় ধাপে আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা ও ঘটনা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত বর্ণনা লিখতে হবে। জিডি সম্পর্কিত কোনো ডকুমেন্ট থাকলে সেগুলো সংযুক্ত করা যাবে। ই-মেইল অ্যাড্রেস লিখতে হবে।
এরপর ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করলেই সম্পন্ন হবে অনলাইন জিডি। আবেদন সম্পন্ন হলে লগইন করে আবেদনকারী জিডির সর্বশেষ অবস্থাও জানতে পারবেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ জানিয়েছে, জেনারেল ডায়েরি (জিডি) মানে সাধারণ বিবরণ। হুমকি, হারানো জিনিস উদ্ধারসহ নানা সমস্যায় নাগরিক পুলিশি সহযোগিতার আশায় নিকটস্থ থানায় জিডি করেন। তাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না থানায় গিয়ে কীভাবে জিডি করতে হয়। ২০১৬ সালে দেশের প্রতিটি থানায় সরবরাহ করা হয় জিডি বুক। এর মধ্যেই চলতে থাকে অনলাইন জিডি চালুর প্রক্রিয়াও।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকার সময় এটুআই প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২০১৬ অনলাইন জিডি চালুর কথা জানিয়েছিলো ডিএমপি। বলা হয়েছিলো, তাৎক্ষণিকভাবে কেউ থানায় যেতে ব্যর্থ হলে অনলাইনের মাধ্যমে জিডি করতে পারবেন। এমনকি দেশের বাইরে থেকেও জিডি করা যাবে। এছাড়া সরাসরি পুলিশ সদর দপ্তরে ফ্যাক্স ও ই-মেইলের মাধ্যমে অভিযোগ জানানো যাবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্রাপুর, কলাবাগান ও ক্যান্টনমেন্ট থানা এবং ময়মনসিংহের সদর ও ভালুকা থানায় এটি চলছে। এছাড়া পরীক্ষামূলকভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নয়টি থানায় চালু হয়েছে অনলাইন জিডির প্রক্রিয়া।
জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, সচল মোবাইল নম্বর ও জন্মতারিখ ব্যবহার করে বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে শুধু ডিএমপির তিন থানা, ময়মনসিংহের দুই ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নয় থানায় এ কার্যক্রম চলছে।