করোনার তোপে জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামের মধ্যে সবচেয়ে বিশে কদর বেড়েছে মেডিকেল ভেন্টিলেটরের। কিন্তু গ্রামীণ এবং বেশ কিছু শহুরে হাসপাতালে এখনো এই ভেন্টিলেটর দুষ্প্রাপ্য। তাই দুর্লভ এই ডিভাইসটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে বাংলাদেশের প্রযুক্তি স্টার্টআপ ক্রাক্স- “CRUX”। জরুরী মুহূর্তে খুব কম খরচেই তৈরি করা যায় ক্রাক্সের থ্রিডি প্রিন্টেড ভেন্টিলেটরটি। তারপরও বাণিজ্যিক চিন্তাকে একপাশে রেখে ভেন্টিলেটরটির সোর্স কোড সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে ভেন্টিলেটরটির উদ্ভাবকরা।
এদিকে কার্যক্ষমতা যাচাই করে ভেন্টিলেটরটিকে গ্রহণ করে নিয়েছে জাপানের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন বায়োমেডিক্যাল অ্যান্ড বায়োমেট্রিক্স। গত ১০ আগস্ট দেশের ইতিহাসের প্রথম মেডিকেল সরঞ্জাম হিসেবে ওপেন সোর্স হার্ডওয়্যার এ্যাসোসিয়েশন (OSHWA) থেকে নিবন্ধনও পেয়েছে ভেন্টিলেটরটি। সনদ নম্বর BD000001।
ভেন্টিলেটরটির উদ্ভাবকেরা জানিয়েছেন, বাজারে প্রচলিত যেকোন ভেন্টিলেটরের চেয়ে বাংলাদেশী এই ভেন্টিলেটরের নয়েজ লেভেল সাধারণ ভেন্টিলেটরের প্রায় অর্ধেক। এখানে সলিনয়েডের পরিবর্তে সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্ভাবিত প্রেশার রিলিজ ম্যাকানিজম এবং পিপ ভালব ব্যবহার করা হয়েছে যা ৩৫ গুণ কম বিদ্যুৎ খরচ করে এবং কম খরচে তৈরী করা যায়। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ড্রোনের পার্টস। এর যেকোন পার্টস সহজে রিপ্লেস করা যায়। ভেন্টিলেটরটির স্টার্টআপ টাইম কমার্শিয়াল ভেন্টিলেটরের তুলনায় কম এবং ব্যবহার অনেক সহজ। এটি PRVC, PCB, SIMV , BiPAP মোডে চলতে সক্ষম। তাছাড়া বাজারের প্রায় সব ধরনের পেশেন্ট সার্কিটে কাজ করতে পারে। এর বড় ডিসপ্লেতে প্রদর্শিত হয় গুরুত্বপূর্ণ রিয়েল টাইম ডাটা।
গত বছরের এপ্রিলে, করোনাভাইরাস মহামারী বাংলাদেশে আঘাত হানার একমাস পর ভেন্টিলেটরটি তৈরির কাজ শুরু করেন দেশের প্রথম ড্রোন উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিত CRUX এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ রাজওয়ানুল হক নাবিল। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের সদস্য একেএম মারুফ হোসেন রাহাত। পরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন শোভন সুদান সাহা, মো হাসানুর রহমান সোহাগ, ফজলে রাব্বি শফি এবং সত্য রঞ্জন সরকার। ভেন্টিলেটরের প্রথম প্রোটোটাইপ তৈরি হয় ২০২০ সালের জুলাইয়ে।
উদ্ভাবক দলনেতা নাবিল জানিয়েছেন, আনুষঙ্গিক খরচসহ মাত্র ১-২ লাখ টাকা ব্যয়ে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা যায় এই ওপেন সোর্স ভেন্টিলেটরটি।