দেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর দিলো বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি। জাতীয় তরঙ্গ বরাদ্দ নীতিমালা থেকে উঠিয়ে নেয়া হলো ৬ গিগাহার্জ ব্যান্ড শেয়ারের বাধা। এই ব্যান্ডের ৫৯২৫ থেকে ৬৪২৫ মেগাহার্জ তরঙ্গসীমাকে ওয়াইফাই/আইওটি ও ওয়্যারলেস ল্যানসহ সেলুলার মোবাইল নেটওয়ার্কে ভাগাভাগি করে নেয়ার সুযোগ উন্মুক্ত করেছে কমিশন।
রবিবার কমিশনের তরঙ্গ বিভাগের পরিচালক ড. মোঃ সোহেল রানা স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত সার্কুলারে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সার্কুলার অনুযায়ী, এই ব্যান্ডের বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সেবা দিতে হলে তরঙ্গ বরাদ্দ, রেডিও যন্ত্রপাতি আমাদানী ও ব্যাবহারের আগে কমিশনের অনুমোদন নিতে হবে।
এতে সেবাদাতাদের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা দূর হবে এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারী পর্যায়ে ল্যাটেন্সি কমবে বলে জানিয়েছেন ড. মোঃ সোহেল রানা।
তিনি বলেছেন, ইন্টারনেটে প্রযুক্তির জন্য ব্যবহৃত প্রান্তিক ডিভাইসের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিটিআরসি ৬ গিগিাহার্জ ব্যাণ্ডের তরঙ্গ অবমুক্ত করা হয়েছে। ফলে পূর্বে ২.৪ গিগাহার্জ (২৪০০-২৪৮৩ মেগাহার্জ) এবং ৫.৭ গিগাহার্জ (৫৭২৫-৫৮৭৫ মেগাহার্জ) ব্যান্ডের তরঙ্গ ওয়াফাই রাউটার, আইওটি এবং অন্যান্য মোট রেঞ্জ ডিভাইসের জন্য ব্যবহৃত হতো। এই ২টি ব্যান্ডের তরঙ্গের ব্যান্ডউইথ যথাক্রমে ৮৩ মেগাহার্জ এবং ১২৫ মেগাহার্জ, যা ইন্টারনেট সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে অপ্রতুল ছিলো। গ্রাহকদের উচ্চ ক্ষমতার ওয়াইফাই রাউটারের জন্য বিটিআরসি ৫৯২৫-৬৪২৫ মেগাহার্জ ব্যান্ডে ৫০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডউইথ শেয়ার ভিত্তিতে ব্যবহার করার জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে। এতে করে ব্রডব্যান্ড গ্রাহকেরা তাদের ডিভাইস থেকে স্বাচ্ছন্দে ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে পূর্ণ গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
এ বিষয়ে প্রযুক্তিবিদ ও ফাইবার অ্যাট হোমের সিটিও সুমন আহমেদ সাবির, কমিশনের এই অনুমোদনের ফলে এখন থেকে ইন্টারনেট সেবাদাতারা ওয়াফাই রাউটার ব্যবহার করে তারহীন ইন্টারনেট সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। কেননা, তারা এতোদিন ধরে ২.৪ ও ৫.৭ গিগাহার্জ ব্যান্ডে যে সেবা দিচ্ছিলেন তা গ্রাহক চাহিদা সংকুলান করছিলো না। কনজাটেড হচ্ছিলো। আর এটি ফ্রি ব্যান্ডউইথ হওয়ায় তা ব্যবহার করা যাবে। ফলে ৬ গিগিহার্জ ব্যান্ড উন্মুক্ত করায় দেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গতিতে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। বাসার ওয়াইফই স্পিড বাড়বে। পারফর্মেন্স ভালো হবে।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আইসিসি কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক বলেছেন, নদী তীরবর্তী, দুর্গম এলকা এবং যেখানে এনটিটিএন নেটওয়ার্ক নেই এই স্পেকট্রাম ব্যবাহার করে সেখানেও ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক পৌঁঁছে দেয়া সম্ভব হবে। তবে এটা লাইন অফ সাইট সিস্টেমে চলে। তাই নেটওয়ার্কের পথে কোনো বাধা থাকা যাবে না। নন লাইসেন্স ফ্রিকোয়েন্সি হিসেবে এই ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে পয়েন্ট টু পয়েন্ট, পয়েন্ট টু মাল্টি পয়েন্ট এবং মেশ নেটওয়ার্ক টপোলজির মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন নেটওয়ার্ক ডেপপ্লয়মেন্টের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারে। ফলে যেখানে এনটিটিএন এর সুবিধা নেই সেখানে ফ্রিক্সড ওয়ারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের এটি কাজে লাগবে।