ফোর্বস ‘৩০ আন্ডার ৩০ এশিয়া’-তে এবার স্থান পেয়েছেন নয়জন বাংলাদেশি। এর মধ্যে তিনটি অ্যাপ নিয়ে অনূর্ধ্ব ত্রিশ ৫জন উদ্যোক্তা যেমন রয়েছেন তেমনি আরো তিন জন যুক্ত হয়েছে ফিনটেক প্রযুক্তি সল্যুশন নিয়ে। শুধু একজন রয়েছেন শিল্পকলায়।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন শিল্পে অবদান রাখা ৩০ জন ব্যতিক্রমী তরুণ উদ্যোগক্তাদের এই তালিকায় ঢাকার ভেতরে যেকোনো সময় গৃহকর্মী নিয়োগ দেয়ার অ্যাপ ‘হ্যালোটাস্ক’ দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন মেহেদী শরণ। মেহেদী শরণ একটি কৃষি প্রযুক্তি স্টার্টআপ অ্যাগ্রোস্টার্টের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। কনজিউমার টেকনোলজি ক্যাটাগরিতে শীর্ষ ত্রিশে উত্তীর্ণ এই তরুণ একইসঙ্গে হ্যালোটাস্কের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা। তার সঙ্গে এই উদ্যোগের অপর প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদুল হাসান লিখন প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও অক্সফামের অনুদানও পেয়েছে। তাছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বিনিয়োগ পেয়েছে তারা। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এক লাখ গৃহকর্মীকে তাদের প্লাটফর্মে যুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে তারা।
এছাড়াও ফিনটেক ও অ্যাপ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আরো তিনটি উদ্যোগ জায়গা করে নিয়েছে প্রভাবশালী ফোর্বস ম্যাগাজিনে ‘থার্টি আন্ডার থার্টি এশিয়া’র নবম সংস্করণে। এরমধ্যে ক্রস-বর্ডার রেমিট্যান্স সেবা দেওয়ার অ্যাপ ‘উইন্ড ডট অ্যাপ’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহাদ আহমেদ এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন ফাইন্যান্স অ্যান্ড ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ক্যাটাগরিতে। তিনি বাংলাদেশ ও নেপালে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পরিষেবার নেতৃত্ব দিয়েছেন। একজন স্ব-শিক্ষিত কোডার ফাহাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স ও অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার স্টার্টআপটি ৩৮ লাখ ডলার তহবিল পেয়েছে। ফাহাদের অ্যাপের মাধ্যমে, দ্রুত ও আরো সাশ্রয়ী মূল্যে ব্লকচেইন প্রযুক্তি ও স্টেবলকয়েনের লেনদেন করা যায়। এই ডিজিটাল ওয়ালেট অ্যাপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন ইলিয়াস। তিনি বাংলাদেশি রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাও-এর সাবেক সিইও।
ফাইন্যান্স অ্যান্ড ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ক্যাটাগরিতে ফোর্বস সেরা তারুণ্যের তালিকায় জায়গা পেয়েছেন মো. শহিদুল ইসলাম, আব্দুল গাফফার সাদী ও মো. তুষার। তারা ‘দ্রুতলোন’ নামের ঢাকাভিত্তিক একটি স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা। এই ফিনটেক অ্যাপটির মাধ্যমে স্থানীয় অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কাগজপত্র মূল্যায়ন করে সহজে ঋণ পেতে সহায়তা করে। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ‘দ্রুতলোন’ ২০ লাখ ডলারের বেশি ঋণ বিতরণ করেছে এবং এখন পর্যন্ত এক লাখ ২৫ হাজার ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছে।
অ্যাপ নয় ঢাকা ভিত্তিক ফিনটেক প্লাটফর্ম ‘যাতিক’ এর জন্য ফিন্যান্স অ্যান্ড ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ক্যাটাগরিতে ফোর্বস ৩০ আন্ডার ৩০ তালিকায় জায়গা পেয়েছেন সুলতান মনি ও মুমতাহিনা আনিকা। সুলতান মনি ও মমতাহিনা আনিকা। ক্ষুদ্র কোম্পানিগুলোকে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার সমাধান প্রদানের মাধ্যমে হিসেব রক্ষায় সাহায্য করে তারা। যাতিক সম্প্রতি ডেকো ইশো ভেনচার ক্যাপিটালের নেতৃত্বে ১৬ লাখ ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ‘ফোর্বস থার্টি আন্ডার থার্টিতে’ ৩০ অনূর্ধ্ব ৩০ শীর্ষক এশিয়া ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছেন ৯ বাংলাদেশি তরুণ। এরা হলেন- মেহেদি স্মরণ (হ্যালো টাস্ক), ফিচার ফোন-ভিত্তিক মোবাইল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম প্যাডিশেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও রেদোয়ান আহমেদ, মো. শহিদুল ইসলাম, আব্দুল গাফফার সাদী এবং এমডি তুষার (দ্রুত লোন), ফাহাদ আহমেদ (উইন্ড অ্যাপ), সুলতান মনি, মুমতাহিনা আনিকা (যাতিক) এবং আনুশা আলমগীর (চলচ্চিত্র “পর্দা”)। আনুশা একটি এআই-চালিত শিক্ষা প্রযুক্তি প্ল্যাটোফর্মের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও।