ডিজিটাল থেকে স্মার্ট হওয়ার যাত্রায় দেশ এখন পাল তুলেছে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের যুগে। এরই মধ্যে বাংলাগভ, ইনফো সরকারের মতো বড় বড় নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। শিক্ষা, বিনোদন, ব্যবসা ও যোগাযোগ সহ বহুমাত্রিক অ্যাপের ব্যবহার এবং ওটিটি’র প্রসারে কারণে দিন দিন ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বাড়ছে। প্রতি সেকেন্ডে ২৪ টেরাবিট ডিজাইন ক্ষমতাসহ ব্রডব্যান্ড যোগাযোগ সরবরাহ করছে সিমিউই-৫।
এরইমধ্যে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের ব্যবাহার প্রায় ৪ টিবিপিএস (টেরাবিটস পার সেকেন্ড) এ পৌঁছেছে। আসন্ন সিটি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্রে করে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের ব্যবহার অন্তত ২৫ ভাগ বাড়বে চলতি বছরেরই শেষ নাগাদ।
অনুমান বলছে, আগামী ৭-৮ বছরের মধ্যে তথা ২০৩০ থেকে ২০৩২ সালের সালের মধ্যে দেশের ব্যান্ডউইথের চাহিদা ২৫ টেরাবাইটের বেশিতে গিয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু এই ইন্টানেট প্রকৌশলে দক্ষ জনবলের সংখ্যা সেই হারে বাড়ছে না। তবে ইন্টারনেটের এই প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক তৈরিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নিয়মিত সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি করে আসছে ইন্টারনেট প্রকৌশলীদের সংগঠন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অপারেটর্স গ্রুপ (সেনগ)। এশিয়া প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলে এ পর্যন্ত ৩৮টি সম্মেলন করেছে সেনগ।
আগামী ৯ মে ঢাকায় বসছে এর ৩৯তম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। বিডিনগ ও এপ্রিকটের পক্ষে ষষ্ঠ বারের মতো এই সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ হিসেবে সম্মেলনের আয়োজক ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। সহযোগী হিসেবে রয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বিটিআরসি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (আইবিপিসি)।
ঢাকার প্যানপ্যাসিফিক সোনরগাও হোটেলে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে সংযুক্ত হয়েছে গুগল, আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস (এডব্লিউএস), ইন্টারনেট সোসাইটি এবং এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার (এপিনিক) এর মতো ইন্টারনেটের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। যোগ দিচ্ছেন ভারত, ভুটান, নেপালসহ সেনগ সদস্যভূক্ত ২৫টি দেশের ইন্টারনেট পেশাজীবি ও সংগঠনের নেতারা।
সম্মেলন উদ্বোধন করবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সেনগ সভাপতি রুপেশ শ্রেষ্ঠ, বিডিনগ সভাপতি রাশেদ আমিন বিদ্যুত ও আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক।
বিশেষ অতিথি থাকছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান ও আইবিপিসি সমন্বয়ক আবদুর রহিম খান।
আয়োজন নিয়ে আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, সম্মেলন উপলক্ষে এবার বাংলাদেশ থেকে ৪জন সহ বিশ্বের ৪টি দেশের মোট ১১ জনকে দেয়া হয়েছে ফেলোশিপ। সর্বোচ্চ ৫ জন ফেলোশিপ পেয়েছেন নেপাল থেকে। সম্মেলনে উপস্থাপিত হবে বেশ কিছু গবেষণা পত্রও। ৮টির মতো দেশ থেকে আসছেন প্রশিক্ষকেরা।
তিনি বলেন, প্রতি বছর দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েশন করছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে প্রায়োগিক দক্ষতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই এই সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের আমরা মূল ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই। দেশেই বিশ্বমানের আরো প্রশিক্ষক তৈরি করতে চাই যারা দেশ বিদেশে গিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশের ভাবমর্যাদা সমুন্বত করবে। নেটওয়ার্কিং খাতে দেশের ইমেজ ব্র্যান্ডিং করবে। বৈশ্বিক সেতুবন্ধন এবং ভার্চুয়াল নিরাপত্তায় বাংলাদেশকে স্বমহিমায় পরিচিত করবে।
সূত্রমতে, অ্যাপিনিকের ইন্টারনেট রিসোর্স অ্যানালিস্ট সুবহা শামারুখের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনা ছাড়াও সম্মেলনে দুইটি টেকনিক্যাল সেশন নেবেন জোবায়ের খানের সভাপতিত্বে অনুরাগ ভাটিয়া, হাসানুজ্জামান আশিক, আবু সুফিয়ান এবং ড. ফিলিম স্মিথের সভাপতিত্বে রাহুল মাখিজা ও ইসমাত জেরিন।
সম্মেলন শেষে শাহবাগের হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে ১০-১৩ মে পর্যন্ত প্রতিদিন তিনটি করে মোট ১২টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। কর্মশালাগুলো হবে বিজিপি ও আইপিভি ৬ চালু, নেটওয়ার্ক সুরক্ষা এবং নেটওয়ার্ক অটোমেশনের ওপর। এতে নিবন্ধিত ১৫০জন করে প্রকৌশলী অংশ নেবেন। প্রশিক্ষক হিসেবে থাকছেন টেরি স্যুইটসার, আব্দুল্লাহ আল নাসের, মো: জোবায়ের খান, ওয়ারেন ফিঞ্চ, শামীম রেজা, সুমন সাহা, অনুরাগ ভাটিয়া, রুপেশ ব্যাসনেট এবং শায়লা শারমিন।