হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ আটক মাশা আমিনির পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর পর থেকেই ইরানে চলছে বিক্ষোভ। এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে অ্যানোনিমাসসহ প্রযুক্তিবিশ্বের পরিচিত হ্যাকারদের সংগঠনগুলো। দেশটির সরকারি অবকাঠামোর ওপর বহুমুখী সাইবার হামলা চালাচ্ছে তারা। পাশাপাশি তেহরান দেশের ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার পর ইরানের নাগরিকদের ‘ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক’ বা ভিপিএন, প্রক্সি সার্ভার এবং ডার্ক ওয়েব ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছে হ্যাকাররা। ডিজিটাল স্বাধীনতা কর্মীরা ইরানের নাগরিকদের টর ব্রাউজার ব্যবহার শেখাচ্ছেন তারা।
ওয়েবসাইট বা সার্ভারের সক্ষমতার চেয়ে বেশি ডেটা ট্রাফিক বিভিন্ন উৎস থেকে পাঠিয়ে সেটা অচল করে দেওয়ার কৌশল ‘ডিস্ট্রিবিউটেড-ডিনায়াল-অফ-সার্ভিস’ বা ডিডিওএস হামলা করার কথা জানিয়েছে সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চেক পয়েন্ট। একাধিকবার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্লাউডফ্লেয়ার এবং ইন্টারনেট পর্যবেক্ষক দল নেটব্লক্স। হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কির বৈশ্বিক গবেষণা ও বিশ্লেষণ বিভাগের পরিচালক আমিন হাসবিনিও।
এনক্রিপ্টেড মেসেজিং সেবা টেলিগ্রামে আরেক হ্যাকার দল ‘অ্যাটলাস ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’ দাবি করেছে, ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং সেলিব্রেটিদের ফোন নম্বর এবং ইমেইলের ঠিকানা ফাঁস করে দিয়েছে তারা। হ্যাকারদের মধ্যে এ প্রক্রিয়াটি ‘ডক্সিং’ নামে পরিচিত।
ইরানী সংসদের কম্পিউটার সিস্টেম হ্যাক করে আইনপ্রণেতাদের ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্ত হাতিয়ে নিয়ে তা ফাঁস করে দেয়ার হুমকী দিয়েছে হ্যাকারদের আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যানোনিমাস এর প্রতিনিধিরা।
হ্যাকারদের দাবিগুলোর সত্যতা যাচাই করা কঠিন হলেও ইরানের অভ্যন্তরীণ ডিজিটাল অবকাঠামোয় হ্যাকারদের হামলার একাধিক ইঙ্গিত পওয়ার কথা জানিয়েছেন চেক পয়েন্ট রিসার্চের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ লিয়াদ মিজরাচি।
সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ম্যানডিয়ান্টের বিশ্লেষক এমিয়েল হাফবার্ট সিএনবিসিকে বলেছেন, “যে সেবাগুলোর ওপর সাইবার হামলা চালানোর দাবি করা হয়ছে তার বেশ কয়েকটি বিভিন্ন সময়ে অফলাইন ছিল বলে নিশ্চিত ম্যানডিয়ান্ট; কিছু এখনও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে।”