একজন গীতিকারের কাছে পাঠানো বিটিভি’র একটি সম্মানী চেক ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। ওই সম্মানী চেকে গীতিকারকে দেয়া হয়েছে মাত্র ১৫৮ টাকা। ওই গীতিকারের নাম জয়নুল আবেদীন।
সম্প্রতি পাঠানো ওই চেকের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জয়নুল আবেদীন লিখেছেন, ‘আজ ডাকযোগে পেলাম। বিটিভি থেকে পাঠিয়েছে ‘গীতিকার রয়্যালটি’। মাঝে মধ্যেই আসে। টাকার পরিমাণ এমনই। এগুলো ব্যাংকে জমা দিই না। এই হলো বাংলাদেশের গীতিকার/সুরকার/ শিল্পীদের মূল্যায়ন। মূল্যায়নের নামে চাতুরী। যা হোক, নামীদামী কোনো শিল্পী/কবি/গীতিকার ইত্যাদি হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতায় আর যাই হোক মরার আগে বিদেশ ঘুরে আসা যায়। আর আমাদের মতো অখ্যাত গীতিকার/সুরকার /শিল্পীর মূল্য বড়জোর ১৫৮ টাকা। এর কোনো সমাধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া কোনদিনই হবে না।’
গীতিকার জয়নুল আবেদীনের সেই পোস্টে অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন। এই বিষয়ে শেখ আনিসুর রহমান নামে একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেন, ‘বিটিভিকে রুপপুরে পাঠানো উচিত। তবে মুল্যায়ন করা শিখবে।’ মামুন নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘এটা একজন শিল্পীর জন্যে অবমূল্যায়ন বৈ আর কিছুই নয়।’
হুমায়ুন আজম রেওয়াজ নামে এক ব্যক্তি গীতিকার জয়নুল আবেদীনের এই আক্ষেপ নিয়ে ফেসবুকে পোস্টে লিখেন, ‘১৫৮ টাকা রয়ালটির নামে শিল্পীকে অপমান-তামাশা করার এই চর্চায় চেক স্বাক্ষরকারীগণের মনে কি একটা জিজ্ঞাসা বাজে না- ভেবে স্তব্ধ হই!’
কবি আবুল হাসান লিখেছেন, ‘পৃথিবীর মাতৃভাষা হলো ক্ষুধা।’ এই ক্ষুধা তো কোনো মহামানবের পক্ষেও অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি। প্রত্যেকেই তার কাজের বিনিময়ে সর্বপ্রথম ক্ষুধাকেই অতিক্রম করতে চায়। একজন শিল্পীও সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। একজন শিল্পী যখন ক্ষুধার কাছে আত্মসমর্পণ করে তখন তার শিল্পচর্চা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ফলে শিল্পীর এই অবমূল্যায়নের ফলে দেশটাও হয়তো কোনো না কোনোভাবে একটা মহৎ শিল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ডিবিটেক/এসিডি