কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নানা ধরনের গুজব রটানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। যা দেখে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুজব ছড়িয়েছে ৩ আগস্ট মধ্যরাতের পর থেকে। রাতের আঁধারে দুটি গুজব সবচেয়ে বেশি ভাইরাল হয়েছে। এর একটি শহীদ মিনারের সমাবেশ নিয়ে। অন্যটি আন্দলনে নেতৃত্বদানকারী সংগঠকদের নিয়ে।
ছাড়িয়ে পড়া গুজবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ফেসবুকের বিভিন্ন সচিত্র পোস্টে রাতেও গণজমায়েত ও দখল সংক্রান্ত পোস্ট ছড়িয়ে পড়লেও সরেজমিনে সেখানে কোনো জমায়েত ছিলো না।
অপরদিকে আরেকটি পোস্টে “সমন্বয়ক কমিটির ৬জনের ১জন সমন্বয়কসারজিসের বাসা থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার করেছে র্যাব-১০। তাহলে এইবার বুঝো তোমরা কাদের জন্য আন্দোলন করেছো“ লিখে টাকার ছবির পোস্ট দেয়া হয়।
এসব পোস্টের নিজে নানা মন্তব্যও করতে দেখা যায় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের। এমন পরিস্থিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো আন্দোলনে গুজব ছড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায় স্বার্থান্বেষীরা। প্রচুর গুজব ছড়াচ্ছে।
নিজেও গুজব ছড়াবেন না। অন্যের গুজব ট্রোল হিসেবেও শেয়ার করবেন না। ফলে কোনো তথ্য যাচাই-বাছাই ছাড়া বিশ্বাস ও শেয়ার না করার পরামর্শ তাদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলছেন, যে কোনো আন্দোলনে স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায়। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এসব গুজব আন্দোলনকে আরও উসকে দিচ্ছে, দেশে সংঘাত বাড়ছে, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। তিনি বলেন, এ ধরনের গুজব সমাজে তৈরি করে বিশৃঙ্খলা, যা রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই যেকোনো খবর যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার না করার পরামর্শ তার।
সেন্টার ফর ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড কোয়ালিটিটিভ স্টাডিজ পরিচালক সুমন রহমান বলেন, আমি যদি কোনো ঘটনার পক্ষে থাকি, তখন সেই ঘটনা সাপোর্ট করে এমন কোনো তথ্য পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বাস করে ফেলি। সেটা মিথ্যা হলেও মানুষ যাচাই করতে ভুলে যায়। কেউ সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার ও লাইক-কমেন্ট করে ফেলে। তাই যেকোনো তথ্য সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার না করে একটু অপেক্ষা করার পরামর্শ তার।