পেশাজীবী নারীদের জন্য চাই আইনী সহযোগিতার প্ল্যাটফর্ম কর্মজীবী ও পেশাজীবী নারীদের প্রয়োজনীয় আইনী সহযোগিতার একটি প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন খাত সংশ্লিষ্টারা।
“প্রযুক্তির কর্মক্ষেত্রে নারী” শীর্ষক এক মুক্ত সংলাপে এই প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এর যৌথ উদ্যোগে শনিবার (২৫ মে) বিসিএস ইনোভেশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংলাপের শুরুতে দুইটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. নোভা আহমেদ ও এমআইটি গ্র্যাজুয়েট তামান্না ইসলাম।
তামান্না ইসলাম তার নিবন্ধে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ দলে মেয়েদের অংশগ্রহণের নিম্নমূখী প্রবণতা ব্যাখ্যা করে বলেন – গণিত ও বিজ্ঞান কেবল ছেলেদের, এ জন্য সন্ধ্যার পরেও বাইরে থাকতে হয়ে এমন ধারা ধারণা মেয়েদের পিছিয়ে রাখছে। দক্ষতা থাকা স্বত্ত্বেও তারা এগিয়ে যতে পারছে না।
অন্যদিকে “সাপোর্টিং মিসিং ডটার” শিরোনামে বক্তব্যে নোভা আহমেদ আর্থ-সামাজিক নানান বিষয় ছাড়াও রোল মডেলের প্রচার, সফল ব্যক্তিদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক, মেয়েদের জন্য পৃথক প্রতিযোগিতা ও ক্যাম্পের আয়োজন এবং সর্বোপরি সময় মতো প্রয়োজনীয় তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারলেই মেয়েদের অংশগ্রহণ অনেকখানি বেড়ে যায়।
তার নিবন্ধে দেখা যায় শিক্ষাক্ষেত্রে নারীপুরুষে সমতা অনেকখানি অর্জিত হলেও কর্মক্ষেত্রে এখনও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীর উপস্থিতি দেখা যায় না। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ২৯ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী বর্তমানে আইসিটি সংক্রান্ত বিষয়ে পড়োশানা করলে এই কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা এখন ১২ শতাংশের কম। আর আইসিটি নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা ২ শতাংশেরও কম।
এর পর একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন গ্রীন ডেল্টা ইনসিওরেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স এন্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ার পারসন ড লাফিফা জামাল, গিগাটেক লিমিটেডের সিইও সামিরা জুবেরি হিমিকা, গ্রাশীণ ফোনের মহাব্যবস্থাপক ও হেড অব কোর অ্যান্ড সার্ভিস প্রজেক্ট টেকনোলজী সিইও, শায়লা রহমান।
প্যানেল আলোচনায় বক্তারা বলেন বর্তমানে বিচ্ছিন্নভাবে নানা উদ্যোগ গৃহীত হচ্ছে। এ সকল কার্যক্রমের সমন্বয় প্রয়োজন। এছাড়া কর্মজীবী ও পেশাজীবী নারীদের প্রয়োজনীয় আইনী সহযোগিতার একটি প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন বলে প্যানেলিস্টরা অভিমত ব্যক্ত করেন।
এক পর্যায়ে সদ্য স্নাতক ফাতেমা তুজ জোহরা জানায় – একটি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশীপের সুযোগ পাওয়ায় তার পক্ষে নিজের যোগ্যতা তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে। ফলে তিনি ঐ প্রতিষ্ঠানে স্থানীয়ভাবে কাজের সুযোগ পেয়েছেন। এ কারণে দেশে শিক্ষানবিশী সংস্কৃতি জোরদার করার তিনি আহবান জানান।
সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারে অতিরিক্ত সচিব এবং স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক জালাল আহমেদ এবং জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা সামসুদ্দোহা।
মুক্ত সংলাপটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক এর সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি মোঃ শাহিদ-উল-মুনীর।