সাম্প্রতিক সময়ে প্রতারণার নতুন ফাঁদ হয়ে উঠেছে ই-কমার্স খাত। এই খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল।
তাই বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের বেধে দেয়া নীতিমালা প্রতিপালনে কঠোরতার পথে হাঁটছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বাণিজ্য সংগঠন ই-ক্যাব। গুরুতর অভিযোগ ওঠায় সমালোচিত ই-ভ্যালির পর আলোচিত ই-অরেঞ্জসহ চারটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করেছে সংগঠনটি।
বাকি ৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- গ্রিন বাংলা ই-কমার্স লিমিটেড, এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড এ্যাগ্রো ফুড অ্যান্ড কনজ্যুমার লিমিটেড এবং টুয়েন্টিফোর টিকেটি ডটকম।
অভিযুক্ত ১৬ সদস্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার সদস্যপদ স্থগিতের নোটিশ দেয়া হয় এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। জবাব দিতে ১৫ দিনের সময় পেয়েছে তারা।
এদিকে ইতোমধ্যেই অভিযোগ সমাধান করে দায়মুক্তি পেয়েছে প্রিয়শপ। অভিযোগগু রুতর না হওয়ায় এই যাত্রায় ছাড় পেয়েছে রোকা ইন্টারন্যাশনাল ও রেডক্স ব্র্যান্ড হিসিবে পরিচিত শপফ্রন্ট।
তবে ব্যবস্থা গ্রহণের নোটিশ দিয়ে চূড়ান্ত ফয়াসালা তৈরির পাইপলাইনে রয়েছে আরো ৯টি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- ইভ্যালী ডট কম লিমিটেড, এ্যানেক্স ওয়ার্ল্ড ওয়াইড লিমিটেড, আমার বাজার লিমিটেড, ফাল্গুনি শপ ডট কম, ধামাকা শপিং, আদিয়ান মার্ট, সিরাজগঞ্জ শপ, গ্লিটার্স আরএসটি ওয়ার্ল্ড এবং আলেশা মার্ট।
এর মধ্যে ৩টি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হলেও বাকি গুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যেতে পারে ই-ক্যাব।
এদের বিষয়ে সদস্যপদ বাতিলের পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করে লিগ্যাল অ্যাকশনে যাওয়া হবে জানিয়েছেন ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল।
ই-ক্যাবের সদস্যপদ বাতিল করার পর কেউ যাতে বাণিজ্য চালিয়ে না যেতে পারে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক।
তমাল বলেছেন, আমরা সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করছি। পাশাপাশি আমরা কাস্টমারদের সচেতন করছি, মেম্বারদের জানিয়ে দিচ্ছি।
এদিকে ই-ক্যাবের শালিসিতে থাকা সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রায় সবকয়টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক লেনদেন ও আর্থিক তথ্য জানতে চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- ধামাকা, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, কিউকম, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট, নিড ডট কম ডট বিডি এবং আলেশা মার্ট।
তবে এদের কেউ যদি এমনিই ব্যবসায় বন্ধ করে দেয় অথবা নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিতও হয়, তহালে তাদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়া আর কোনো সুযোগ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। ওয়েবসাইট বন্ধ বা কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল করতে পারলেও নীতিমালা ভঙ্গ করায় দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই।
এমন অবস্থায় ই-কমার্সে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এসব নীতিমালার আলোকে শিগগিরই আইন প্রণয়ন করার কথা জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা-ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক এবং কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান হাফিজুর রহমান। তবে তা এখনো পরিকল্পনা পর্যায়েই রয়েছে।
সার্বিক বিবেচনায় দ্রুততম সময়ে ই-কমার্সে বাধ্যতামূলক এসক্রো সেবা চালু এবং ব্যাপক ভিত্তিক জনসচেতনতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বিশেজ্ঞরা।