যারা অপ্রপ্রচার করেছেন তাদেরকেও সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন ই-ক্যাব নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ী অগ্রগামী প্যানেল প্রধান শমী কায়সার। ই-ক্যাব অফিসসহ সব বিষয়েই বলেছেন, কমিটমেন্ট করেছি করে দেখাবো।
জয়ী হওয়ার পর অনুষ্ঠিত তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে কখনো ভেজা কণ্ঠে আবার কখনো দৃঢ়তার সঙ্গে বক্তব্য রাখেন গুণী এই শিল্পী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শমী কায়সার বলেন, বিগত সময়ে হয়তো মিডিয়ার সঙ্গে রুটিন আকারে বসা হয়নি। এটা আমাদের জন্য একটা লার্নিং। তবে ডিজিটাল গরুর হাট, টিসিবির সঙ্গে পেঁয়াজ, রুরাল টু গ্লোবাল ই-কমার্স পলিসি বৈঠক; যখন যে প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি মিডিয়ার সবাইকে নিয়েই করেছি। গত দুই বছর এই কাজটা আমাদের জুমেই করতে হয়েছে। তারপরও আমরা এমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবার একটা স্বতন্ত্র্য মিডিয়া উইং করবো।’
ই-ক্যাব অফিস নিয়ে উত্থাপিক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “কোভিড পরিস্থিতি আর এক্সট্রা কস্টের কারণে ই-ক্যাব অফিস বড় করা হয়নি। তবে এখন এক মাসের মধ্যে করা হবে।”
“আমি আমার ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞ। কেননা, নির্বাচনকে কেন্দ্রকরে গত এক মাস ধরে রিজলভড ইস্যুগুলো নিয়েও আমাদের বিব্রত করার অপচেষ্টা চলেছে। ফেলো ফিলিং নিয়ে কাজ করলেও এই ধরনের ইন্ডাস্ট্রিতে কোভিডে যারা আমাদের ওপর আস্থা রেখে সামনে চলেছিলো তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে এভাবে হঠাৎ করে বিব্রতকর ও অগ্রহনযোগ্য মেসেজ পাঠিয়েছে তাতে আমার কাছে খারাপ লাগছিলো। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মর্মমাহত হয়েছিলাম। মেম্বাররা সেসব মিথ্যায় কান না দিয়ে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে। আমরা সরবে-নিরবে কাজ করার কারণেই অপপ্রচার কাজে লাগেনি। মিথ্যা অপবাদে আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি। বিশ্বাসের জয় হয়েছে। তাই গত বছর যদি আমরা আমাদের দায়িত্বের ৪০ শতাংশ কাজ করি, তাহলে এবার হান্ড্রেড পার্সেন্ট দিয়ে সবগুলো কমিটমেন্ট পূরণ করতে কাজ করবো। বিষোদগার করে নয়; একসাথে সবাইকে নিয়ে কাজ করবো। প্রত্যেক ভোটারের কাছে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। কেননা, আজ প্রমাণ হয়েছে, সত্য চিরদিন সত্য। সত্য প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। অর্থের কাছে হেরে যায় না”-যোগ করেন শমী কায়সার।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নেয়া উদ্যোগের বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, ডিবিআিইডি আসার কারণে বেশ কিছু ফেসবুক ভিত্তিক উদ্যোক্তা ই-ক্যাবের সদস্য হতে আবেদন করেছেন। এবার তাদেরকে নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করবো।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্যানেল থেকে নির্বাচিত না হওয়া রুহুল কুদ্দুস ছোটন যেমন ছিলেন; তেমনি প্যানেলের বাইরে থেকে নির্বাচিত পরিচালক সেবা এক্সওয়াইজেডের ইলমুল হককের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে তবে জ্যামের কারণে তিনি এসে পৌঁছতে পারেননি বলে জানান শমী কায়সার।
অপরদিকে আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, কোভিডের দুই বছরে লকডাউনে আমরা শুধু সদস্যদের কল্যাণেই কাজ করিনি; আমরা আমাদের পলিসিগত যত ঘাটতি ছিলো তা ওভারকাম করতে চেষ্টা করেছিলাম। ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ও এসওপি দিয়ে স্ক্যামারদের পথ বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। পাশাপাশি ডিজিটাল ইকোনোমি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ক্ষেত্রে আমরা অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আজকের রায়ের মাধ্যমে তারই জয় হয়েছে। তাই আগামীতেও এই ধারা অব্যহত থাকবে। ১০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এই প্লাটর্মকে প্রস্তুত করবো। ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের জন্য ড্রাইভ দেবো।
প্যানেলের বাইরে থেকে নির্বাচিত নতুন সদস্য এবং একজন প্রার্থী নির্বাচিত না হওয়া বিষেয়ে বলেন, “যোগ্যরাই এসেছেন। তার মানে অন্যরা অযোগ্য তা নন। আর আমার মনে হয় সজীব ভাই ভেরি নাইস অ্যান্ড হাম্বল। তাই উনি আসাতে আমাদের শক্তি আরো বেড়েছে। আমরা সবাই এক সাথে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।”
প্রথবারের ভোটেই সর্বোচ্চ ভোটে জয়ী আম্বারীন রেজা বলেন, অগ্রগামীর কারণে আমি আজ নির্বাচনে আসতে পেরেছি। এজন্য তমাল ভাই ও শমী আপার কাছে কৃতজ্ঞ। তবে ভোটাররা যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তাতে আপার রেসপনসিবিলিটি অনেকগুণ বেড়ে গেলো। যেভাবে ইলেকশনের জন্য কাজ করেছি, সেভাইবেই আগামীতে ইসি, মেম্বার এবং ইন্ডাস্ট্রি, সর্বোপরি পলিসি ঘাটতি নিয়ে কাজ করবো।
তিনি আরো বলেন, “এই ইলেকশন থেকে আমার মনে হয়েছে মেম্বার্স লাইকস গুড ম্যানার্স পিপলস যাদের মধ্যে পজেটিভিটি আছে।”
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের নানা প্রশ্নের জবাব দেয়ার পাশাপাশি ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আসিফ আহনাফ, নাসিমা আক্তার নিশা, মোহাম্মাদ সিহাব উদ্দিন শিপন, সাইদুর রহমান এবং শাহরিয়ার হাসান।
আসিফ বলেন, আমি মনে করি, সদস্যদের সঙ্গে আন্তরিক সংযোগ ও ভালোবসার জয় হয়েছে। আর নোংরা ও অশালীন কথার পরাজয় হয়েছে। সদস্যরা যোগ্যদের চিনতে পেরেছে। আমি মনে করি ডিজিটাল রূপান্তরে ই-ক্যাব অগ্রগামী ভূমিকা রাখবে।
নাসিমা আক্তার নিশা মনে করেন, গত সাত বছরের অর্জনেরই স্বীকৃতি এই বিজয়। তিনি বলেন, আমরা এবার এমন কেনো কমিটমেন্ট করিনি যা করবো না। আমরা তাই করবো যা দেশ ও ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো হবে।
মোহাম্মাদ সিহাব উদ্দিন শিপন বলেন, এই ভোট আমাদের একটি স্বীকৃতি দিয়েছে। এটা গত বেশ কিছুদিন ধরে চলা আলোচনা-সমালোচনার রেজাল্ট। আমি সদস্যদের ভালোবাসায় কৃতজ্ঞ।
সাইদুর রহমান বলেন, এই বিজয় আগামীতে দ্বিগুণ শক্তিতে কাজ করার স্পৃহা দিয়েছে। আমরা এবার এমন কিছু করতে চাই যার ফলে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি আমাদের সারাজীবন মনে রাখবে।
শাহরিয়ার হাসান বলেন, ভোটারদের সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ দিয়ে আমরা এখন সামনের দিকে এগুতে চাই। ইশতেহারে আলোকপাত করা সাতটি পয়েন্ট অনুযায়ী আগামী ৩ বছরে আমরা যে বড় কাজ নিয়েছি তা তাড়াতাড়ি শুরু করে কমিটমেন্ট রাখতে চাই। আমরা মনে করি এটা কেবল ভোটারদের দেয়া প্রতিশ্রুতি নয়; এটা জাতীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে।