ই-কমার্স ব্যবসার জন্য এসওপি, এসক্রো সেবা ও ডিজিটাল পেমেন্টের পর এবার এলো কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পিত্তি ব্যবস্থাপনা, ডাকসেবার ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে সেন্ট্রাল লজিস্টিক সেল গঠন এবং প্রশিক্ষণ ও অর্থায়ন সহায়তার মাধ্যমে কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ই-কমার্স ব্যবসার মূল স্রোতধারায় অন্তর্ভূক্তির অভিপ্রায় জানালো ই-ক্যাবের চতুর্থ কার্য নির্বাহী কমিটির পরিচালক নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ৯ পরিচালক প্রার্থীর প্যানেল অগ্রগামী। স্মার্ট ই-ক্যাব সেক্রেটারিয়েট গড়ে তুলে সদস্যসেবাকে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল সক্ষমতার অধীনে আনতে সাধ্যের সর্বোচ্চ নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।
এজন্য ‘অভিজ্ঞতালব্ধ দক্ষ ও নিষ্ঠাবানদের সমন্বয়ে’ এই প্যানেল সদস্যের নিয়ে এই খাতের ব্যবসায়িক ট্রান্সপারেন্সি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে ই-ক্যাবকে স্মার্ট ই-ক্যাব হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন এই প্যানেলের প্রধান ডেটাবেজ ডিজিটাল প্লাটফর্ম ধানসিড়ি প্রতিষ্ঠাতা শমী কায়সার। জানিয়েছেন, এজন্য ই-ক্যাব সচিবালয়কে পুরোপুরি ডিজিটাল করার পরিকল্পনার কথা। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে ই-কমার্স খাতের জন্য আগামী দুই বছর খুবই ক্রুসিয়াল সময় উল্লেখ করে এই প্যানেলে তিন নারী নক্ষত্রকে সঙ্গে নিয়েই ই-ক্যাব আগামী দুই বছর পর অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কম্পিউটার জগত প্রধান নির্বাহী মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।
কীভাবে সেই লক্ষ্য অর্জন করবে তা তুলে ধরেছেন প্যানেলে নিষ্ঠাবান সফল উদ্যোক্তা ফুডপ্যান্ডা সহ-প্রতিষ্ঠাতা আম্বারীন রেজা। বিস্তারিত উপস্থাপনায় জানিয়েছেন, ই-ক্যাবে মোট সদস্যের ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা হিসেবে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে আগামী ২ বছরের মধ্যে ই-কমার্স খাতে ১০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি এবং ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ অর্জনের মাধ্যমে ই-কমার্স খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে অগ্রগামী। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের টাইম লাইন তুলে ধরার পাশাপাশি বহুল প্রচলিত ক্রসবর্ডার ই-কমার্স বাস্তবায়নের প্রতিটি বাঁকে কোনো কোন বিষয় নিয়ে সদস্যদের কে কোন কাজটি করবে, নীতিমালা থেকে শুরু করে ব্যবসায় কাঠামোগত পরিবর্তন কীভাবে হবে এসব বিষয় তুলে ধরেন পেপার ফ্লাই সহ প্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার হাসান।
এজন্য এসওপি মেনে সারকারি নীতি অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়ার কুটির উদ্যোক্তাকে মূল ধারায় নিয়ে আসতে এই প্যানেলের সদস্যরা কাজ করবে বলে জানিয়েছেন ই-হেলথ প্রতিষ্ঠান ডায়াবেটিস স্টোর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন শিপন।
এই প্রতিশ্রুতির বাস্তবতা তুলে ধরে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জাবাবে উই সভাপতি এবং রিভারি প্রধান নির্বাহী নাসিমা আক্তার নিশা জানিয়েছেন, এফ কমার্স নারী উদ্যোক্তাদের ই-ক্যাবের মূল ধারায় নিয়ে আসতে আমরা কোভিড সময়ে উদ্যোক্তা হতে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাকে ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় আনতে ইনকিউবেশন সাপোর্ট সেন্টারের ঠিকানা ব্যবহার করতে পারছেন। আইসিটি বিভাগের অর্থায়ন সহায়তায় আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এক হাজার নারী উদ্যোক্তা নিজেদের ওয়েব সাইটের অধীনে আসবে। সে হিসেবে সে তখন ই-ক্যাবের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে।
এর পরের ধাপ বিষয়ে উদ্যোক্তা ও ভোক্তার মধ্যে সুসম্পর্ক ও আস্থা অটটু করতে ‘রিফান্ড পলিসি’ জোরদার করার কথা জানালেন ফুডপ্যান্ডা সহ-প্রতিষ্ঠাতা আম্বারিন রেজা। বললেন, পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নে সদস্যদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। জন্মলগ্ন থেকেই যারা ই-কমার্সের উন্নয়নে নানা পালিসি নিয়ে কাজ করছেন তারা আগামীতেও ভ্যাট, কঞ্জুমার, গ্র্যান্ট ও ফান্ড ইস্যুতে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
প্রার্থীদের মধ্যে মাত্র ১৯ বছর বয়সে প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ই-ক্যাবে সংযুক্ত হয়ে বহু তরুণকে এই ব্যবসায় সম্পৃক্তকারী সদস্য আসিফ আহনাফ জানালেন, তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য ই-বিজনেস সাপোর্ট সেন্টার থেকে তাদের বিজনেস ম্যাচ মেকিংয়ে কাজ করবেন তিনি। সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নিবিঢ় ভাবে কাজ করার কথা বললেন প্যানেলের অপর প্রার্থী ডিজিটাল হাব প্রতিষ্ঠাতা সাইদুর রহমান।
ফোকাস ফ্রেম প্রতিষ্ঠাতা এ ডি রুহুল কুদ্দুস ছোটন বললেন, স্মার্ট সেক্রেটারিয়েট গঠন ও ব্র্যান্ডিং নিয়ে সতীর্থদের সহযোগিতায় কাজ করবো।
ক্রস বর্ডার বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে কাজ করার ইচ্ছে পোষণ করেন পেপার ফ্লাই সহ প্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার হাসান।
বৃহস্পতিবার (২ জুন ২০২২) রাতে রাজধানীর বিজয়নগরের একটি হোটেলে অগ্রগামী প্যানেলের ভিশন ও বাস্তবসম্মত ইশতেহার তুলে ধরার পর এসব কথা বলেন ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের জাতীয় সংগঠন ই-ক্যাবের চতুর্থ কার্য নির্বাহী কমিটির পরিচালক নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ৯ পরিচালক প্রার্থী।