সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারসহ জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউব ও অনুসন্ধান ইঞ্জিন গুগলে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে প্রায় দুই হাজার ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান। এসব ডিজিটাল প্লাটফর্ম দেশ থেকে বিপুল অংকের টাকা আয় করলেও বাংলাদেশ সরকারকে কোনো রাজস্ব দেয় না।
অন্যদিকে দেশে ইউটিউব চ্যানেল জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় এর প্লাটফরমে গান, নাটকসহ বিনোদনের বিভিন্ন ভিডিও দিয়ে তরুণরা ইউটিউবের সঙ্গে ‘প্রোফিট শেয়ারিং’ করছেন। আবার ব্যক্তিগতভাবেও অনেকে ফেসবুক পোস্টে বিজ্ঞাপন দিয়ে আয় করছেন। যেসব ফেসবুক পেজের লাইক বা ফলোয়ার লাখের বেশি তারা এই সুযোগ নিচ্ছেন।
আবার কোনো অনলাইন প্রতিষ্ঠান সরাসরি তাদের আর্টিকেল, পণ্যের বিজ্ঞাপন অথবা কোনো বক্তব্য সরাসরি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ফেসবুককে অর্থ দিয়ে বুস্ট করছেন।
কিন্তু বছরে বিজ্ঞাপন বাবদ এসব প্রতিষ্ঠান দেশ থেকে কি পরিমাণ টাকা নিয়ে যাচ্ছে তার কোন পরিসংখ্যান সরকারের কাছে নেই।
তবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্যিক সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এখন প্রায় ৫০ হাজার ফেসবুক পেজ আছে-যা ই-কমার্স ব্যবসা হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু ই-ক্যাবের সঙ্গে সংযুক্ত না থাকায় এদের সম্পর্কে কোন তথ্য সংগঠনটির কাছে নেই।
তিনি আরো জানান, অনলাইনে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ হাজার পারসেল সরবরাহ করা হয়। ঈদের সময় ৪০ থেকে ৪৫ হাজারে পৌঁছায়। অনলাইন বা ই-কমার্স মার্কেটের বার্ষিক টার্নওভারের পরিমাণ ৮’শ কোটি থেকে এক হাজার কোটি টাকার মতো।
তিনি জানান, ফেসবুক ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের বিজ্ঞাপন বুস্ট করার জন্য দৈনিক ৫ থেকে ১০ মার্কিন ডলার ব্যয় করে থাকে। কিন্তু বিষয়টি ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাদ্ধ। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো কাঠামো গড়ে ওঠেনি। এটা জরুরী। তাহলে অনেক সমস্যাই কেটে যাবে।
ই-কমার্স ব্যবসায়কে এগিয়ে নিতে এগুলোকেও একটি আইনি কাঠামোতে নিয়ে আসার পাশপাশি ফেসবুক, গুগল, ইউটিউবসহ ডিজিটাল ফ্লাটফর্মের ব্যবসা বা বিজ্ঞাপনসমূহ বৈধ চ্যানেলে নিয়ে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ফেসবুক ই-বাণিজ্যের একটি অন্যতম মাধ্যম হলেও এই মাধ্যমটির অপব্যবহার ঠেকাতেও আমাদের সচেতন থাকতে হবে। অনেক অসুধু ব্যবসায়ী এই মাধ্যমটি ব্যবহার করে প্রতারণা করছেন বলেও আমরা প্রায়শই অভিযোগ পাই। এটি দেশে ই-কমার্স ব্যবসায় প্রসারে বাধা। আমরা তাই ই-কমার্স নীতিমালার মধ্যেই এর পরিত্রাণ আশা করছি। আহ্বান করি, সবাই যেন সচেতনতার সঙ্গে অনলাইনে লেন-দেন করেন।