ঈদের আগমনী আবহে রাজধানীর গুলিস্তান জিরোপয়েন্টে অবস্থিত ঢাকা জেনারেল পোস্ট অফিস মিলনায়তনে শুরু হলো দুই দিনের ই-কমার্স ডাক মেলা। শুরু থেকেই দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের পদভারে মুখর হয়েছে পোস্ট অফিস মিলনায়তন।
মেলায় মোট ৮০টি স্টল ছাড়াও ৬টি মিনি ও ৬টি প্যাভিলিয়নে বিশেষ ছাড় ও উপহারে নিজেদের পণ্য ও সেবার পসরা নিয়ে হাজির হয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো।
মেলায় দারাজ, আজকের ডিল, চালডাল, প্রিয়শপ, রকমারি, দিনরাত্রি, ই-পোস্ট, স্পিকলার রেজিস্ট্রো, অর্গানিক অনলাইন, লেইসফিতা, ফোকাস, স্পাইডার ডিজিটাল, আমার শপ, খাসফুড, সাজগোজ, ওয়ালেট মিক্স, ক্রিয়েটিভ আইটি, বইঘর, টিভিএস, সুন্দরবন, সিএক্সপ্রেস, এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড, ক্রাফটভিশন, এপকম, সপারু, জেএমএস, ডিবিবিএল, পাঠাও, পেপারফ্লাই, কাবলিওয়ালা, সিন্দবাদ, বাগদুম এবং সিঙ্গারের মতো প্রতিষ্ঠান দর্শনার্থীদেরকে নিজেদের পণ্য ও সেবা সম্পর্কে অবহিত করছে। বিভিন্ন অফার দিয়ে বিক্রিও করছে কেউ কেউ।
শুক্রবার (১৭ মে) সকালে মেলার উদ্বোধন করেন ডাক-টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ডাকঘর সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাশু শেখর ভদ্র। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দারাজ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মোস্তাহিদল হক এবং ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাশু শেখর ভদ্র বলেন, আমরা ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছি। ডাক বিভাগও এর বাইরে নয়। দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত ই-কমার্স ডাক মেলা সেই বার্তাই সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে দিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ই-ক্যাব ও ডাক বিভাগের মেলবন্ধনে নাগরিক জীবন আয়াসসাদ্ধ ও পণ্য ও সেবা সহজলভ্য হবে।
দারাজ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, ডিজিটাল কমার্স ডিজিটাল বাংলাদেশ রুপকল্পের অন্যতম অনুষঙ্গ। এই ব্যবস্থায় পণ্য ও সেবা কেবল সহজলভ্যই হয় না; গ্রাম ও শহরের দূরত্ব ঘুচে দিয়ে বিদ্যমান পণ্য মূল্যের ফারাককেও একটি প্রতেযোগিতামূলক পর্যায়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, গত প্রায় দুই মাস ধরে ডাক বিভাগের সহায়তায় দেশের ছয়টি বিভাগে ই-কমার্স ডাক মেলাার আয়েজন করেছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কেবল বরিশালে মেলা করা যায়নি। তবে অন্য সব বিভাগেই মেলায় ৪০টির মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। মেলার মাধ্যমে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এবং ডাক বিভাগের মাধ্যমে মেলবন্ধন রচিত হয়েছে। ডাক বিভাগের ই-পোস্ট সেবার মাধ্যমে ৪০ হাজারের মতো পণ্য সরবরাহ করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি পণ্যও মিসিং হয়নি।
ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক সুশান্ত কুমার মণ্ডল বলেন, ভবিষ্যতে ই-কমার্স এবং নগদ বাংলাদেশ ডাক বিভাগকে নেতৃত্ব দেবে। এই সেবাদুটোকে এগিয়ে নিতে পারলে সাফল্য আসবে। এজন্য ই-ক্যাব সদস্যভূক্ত ৯০০ ই-কমার্স মার্চেন্টকে ভালোভাবে সেবা দিতে পারলে ক্রেতারা আর দোকানে যাবেন না।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস বলেন, মানুষ সব সময় স্বস্তিতে থাকতে চায়। এর কারণেই মানুষ নতুন নতুন উদ্ভাবন করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি নাগরিক জীবনে সেই স্বস্তি নিয়ে এসেছে। ই-কমার্স সেই স্বস্তি ও সুখানুভূতির মাধ্যম।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৮ মে) সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রেফেল ড্র বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে জাতীয় ই-কমার্স ডাক মেলা। এর আগে মেলায় পণ্য বিকি-কিনির পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হবে দুইটি সেমিনার। সেমিনারগুলোর মধ্যে গ্রামীণ ই-কমার্স সেবা পৌছে দিতে ই-পোস্ট ও একশপ অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে নয়টায়। আর তথ্যআপা অ্যাপের ব্যবহার নিয়ে সেমিনারটি হবে বেলা ১২টায়।
প্রসঙ্গত, ই-কামার্সের ডাক মেলার পৃষ্ঠোপোষকতা করেছে দারাজ। সহপৃষ্ঠোপোষক হিসেবে রয়েছে- চালডাল.কম, রেজিন্ট্রো.কম, রকমারি.কম, প্রিয়শপ, দিনরাত্রি, এমএমইভাই, স্পিকলার, ফাইবার অ্যাটহোম, এসএসএল কমার্জ এবং মাসিক কম্পিউটার জগৎ।
