প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে ল্যাপটপ, প্রিন্টার এবং টোনার কার্টিজের উপর প্রস্তাবিত অতিরিক্ত ১৫% ভ্যাট প্রত্যাহারের আকুল আবেদন জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তিপণ্য ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যিক সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) বিকালে রাজধানীর বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে (আইডিবি) আয়োজিত এক মত বিনিময় সভায় আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কম্পিউটারের ওপর নতুনভাবে আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছিলো।
এরপর এসব বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া আবেদনে বলা হয়, ১৯৯৮ সালে কম্পিউটারের উপর সকল ভ্যাট এবং ট্যাক্স প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের প্রধানমন্ত্রী যে গোড়াপত্তন করে দিয়েছিলেন, তার উপর নির্ভর করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি অনুষঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করে আপনি দেশকে দাঁড় করিয়েছেন নতুন এক উচ্চতায়। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ তাই আজ বিশ্ব-দুয়ারে গর্বিত উদাহরণ।
মূলত বাংলাদেশের উন্নয়নের সাথে কম্পিউটারের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একদা নাগালের বাইরে থাকা কম্পিউটার সাধারণ মানুষের হাতের মুঠোয় এনে দেয় আপনার ১৯৯৮ সালের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এর ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, ব্যবসা, দাফতরিক কাজ সহ সর্বক্ষেত্রে আজ কম্পিউটার একটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে।
করোনার সময়ে পুরো বাংলাদেশের সকল জরুরী কার্যক্রম যেমন স্বাস্থ্যসেবাসহ সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমুহের সার্ভিস, অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা, স্কুলের অনলাইন ক্লাস, মানুষের জীবনযাত্রাকে সচল রাখার সকল কার্যক্রম কম্পিউটারের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের একটি বড় অংশ হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত ছাত্র-ছাত্রী, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী এবং ফ্রিল্যান্সার।
বিদেশে একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার এর যা দাম, তার তুলনায় একই কম্পিউটারের সকল যন্ত্রাংশ সংযোজনের উদ্দেশ্যে পৃথকভাবে ক্রয়ের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দাম পড়ে। তাই এই মুহূর্তে বাংলাদেশে শতকরা ৯৯ ভাগ ল্যাপটপ কম্পিউটার সংযোজিত অবস্থায় আমদানি করা হয় ।
যদিও আগে থেকে স্থানীয়ভাবে সংযোজন ও উৎপাদনের জন্য আমদানী করার চেয়ে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত বেশি ছাড় দেয়া আছে। কিন্তু, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি করা ল্যাপটপ, প্রিন্টার, টোনার কার্টিজের উপর আমদানী পর্যায়ে অতিরিক্ত ১৫% ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
করোনাকালীন সংকটের কারণে এবং জাহাজীকরণ ভাড়া বৃদ্ধি হওয়ায় ৩০% মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। সম্প্রতি ডলারের দাম বাড়ায় বাংলাদেশে কম্পিউটারের দাম অতিরিক্ত ১০% বৃদ্ধি হয়েছে। তদুপরি ১৫% অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপের ফলে সর্বমোট ৫৫% মূল্যবৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশংকা করছি। যার ফলশ্রুতিতে একটি ল্যাপটপ কম্পিউটারের ন্যূনতম মূল্য মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত ছাত্র-ছাত্রী, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী এবং ফ্রিল্যান্সারদের নাগালের বাইরে চলে যাবে। এর ফলে, স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে।