স্বাধীনতার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবসে তিন ধরে শ্রদ্ধা নিবেদন, স্মরণ সভা ও দোআ অনুষ্ঠান করছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি।
১৫ আগষ্ট (রবিবার) দুপুরে সমিতিরসভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর এর নেতৃত্বে বিসিএস কার্যনির্বাহী কমিটি এবং বিসিএস সদস্যরা রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এসময় বিসিএস সহসভাপতি মো. জাবেদুর রহমান শাহীন, মহাসচিব মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন, কোষাধ্যক্ষ মো.কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, পরিচালক মোশারফ হোসেন সুমন এবং মো. রাশেদ আলী ভূঁঞাসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শোক দিবসে বাদ যোহর রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ বিসিএস কার্যালয়ে হাইব্রিড পদ্ধতিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে দেশবাসীর কল্যাণে দোয়া করা হয়। করোনাকালীন সময়ে যেসব বিসিএস সদস্যরা মৃত্যুবরণ করেছেন এবং যারা অসুস্থ রয়েছেন তাদের জন্যও বিশেষ দোয়া করা হয়।
শোক দিবস উপলক্ষে বিসিএস কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
এর আগে ১৪ আগষ্ট সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজনে প্রধান আলোচক ছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. এ এফ এম আব্দুল আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, যারা রাইফেল বা বন্দুক হাতে ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার বাড়িতে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন শুধু তারাই বঙ্গবন্ধুর খুনী নন। এর পেছনেও ষড়যন্ত্রকারী রয়েছে। চক্রান্তকারী রয়েছে। এখনো বিদেশের চ্যানেলে খুনীদের সাক্ষাতকারে সেইসব চক্রান্তকারীদের নাম জানা যায়। আমরা বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে এই তথ্য উপাত্তগুলো তুলে ধরতে চাই।
পলক বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল নিজস্ব স্যাটেলাইট। ৪৩ বছর পর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে দেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু ১’ উৎক্ষেপণে আমরা সফলতা অর্জন করেছি। বঙ্গবন্ধু বৈষম্যমুক্ত আত্ম নির্ভরশীল সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সে স্বপ্নে মাত্র সাড়ে তিন বছরে ভিত্তি রচনা করেছিলেন। তার একটি বড় উদাহরণ আজকে সারা বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টেলিভিশন বিক্রি হয়, ৩০ লক্ষাধিক রেফ্রিরেজারেটর বিক্রি হয়, প্রায় ৫ লক্ষাধিক কম্পিউটার ও ল্যাপটপ বিক্রি হয় এবং প্রায় ৪ কোটির বেশি মোবাইল ফোন বিক্রি হয়। সাড়ে তিনশ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ একটি মধ্যম আয়ের দেশ।
প্রধান আলোক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, কালরাত বাঙ্গালীর জীবনে বার বার এসেছ। ২৫ মার্চ, ১৫ আগস্ট, ২১ আগস্ট আমাদের জীবনে ফিরে ফিরে আসে। শুধু পালন করা নয়, সময় এসেছে ষড়যন্ত্রের পিছনে যে ষড়যন্ত্র, খুনীদের পিছনে যে আসল খুনী তাদের বিষয়ে কথা বলার। নিজেদের ঘরে অপ্রকাশিত বন্ধুরুপী শত্রুও আছে। আমাদের তাদেরকে চিনতে হবে। এই ষড়যন্ত্রের মুলোৎপাটন করতে হবে।
দ্য এডিটর গিল্ড বাংলাদেশ এর সভাপতি এবং বিসিএস উপদেষ্টা মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রিন্সিপালটি ছিল খুবই সরল। উনি ছিলেন মাটির নেতা। জাতীয়তাবাদী নেতা। হাজার বছরের বাঙালি ইতিহাসের সফল শেষ নায়ক যিনি বাঙালি জাতিকে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিতে সক্ষম হয়েছেন। সেজন্য আমি ১৫ আগস্টকে শোক দিবস বলি না। মাঝে মাঝে শক্তি দিবস বলতাম। এখন বলি চেতনা নবায়নের দিবস। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল, যা কিছু হবে দেশের মাটির সাথে সম্পৃক্ত। যা কিছু হবে এ প্রকৃতি থেকে নেয়া। যা কিছু হবে এ দেশের মানুষের জন্য। এই সামান্য প্রিন্সিপালটাকে মেনে নিলেই দেশের উন্নয়ন হবেই।
এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর। তথ্যপ্রযুক্তিবিদ টি.আই.এম নুরুল কবীরের সঞ্চালনায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে ১৬ আগষ্ট, সোমবার ‘প্রযুক্তির উত্থান : শেকড়ে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আরো একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বিসিএস। সভায় প্রধান অতিথি থাকছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের সিইও বীরেন্দ্রনাথ অধিকারির সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক থাকছেন একুশে পদক প্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশ গুপ্ত। এছাড়াও আলোচনা করবেন ডাটাসফট সিস্টেমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব জামান।