ডিজিটাল দলিল-দস্তাবেজের ‘বিষুদ্ধতা’ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নাগরিকের পরিচয় জালিয়াতি ঠেকাতে নিজেরাই পুরোদস্তুর একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে আইসিটি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের বিজিডি ই-গভ সার্ট টিম। আগামী সোমবার থেকে এই ই-কেওয়াইসি-টি প্রাথমিক ভাবে আইসিটি বিভাগে ব্যবহার করা হলেও আগামী ১৭ জানুয়ারির পর এটি সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগেও ব্যবহৃত হবে বলে জানা গেছে। এতে সরকারের কোটি টাকা বাঁচার পাশাপাশি নাগরিকের তথ্য বিদেশে পাচার হবার পথও বন্ধ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুরুতে এই ই-কেওয়াইসিতে সরকারি অনুদান বা ভাতা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের পরিচয় যাচাই এবং তাদের ডিজিটাল স্বাক্ষর যাচাই করার কাজ শুরু হলেও অল্পদিনের মধ্যেই এতে যুক্ত হবে ডিজিটাল ডকুমেন্টের বিষুদ্ধতা নিশ্চিত করার কাজও।
সূত্রমতে, ই-কেওয়াইসি সেবা কেনার জন্য গত আগস্ট মাসে একটি দরপত্র দিয়েছিলো আইসিটি বিভাগ। তখন এই সেবা দেয়ার জন্য সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যবহার ভেদে সর্বনিম্ন দর পড়েছিলো ৭০ লাখ থেকে এক কোটি টাকায়। তবে এই অর্থ ব্যয় না করেই সুরক্ষাঅ্যাপের মতো এবার মাত্র ২০ দিনে জাতীয়ভাবে এই ই-কেওয়াইসি-টি তৈরি করেছে এটিমের দুইজন প্রোগ্রামার।
ই-গভ সার্টের তৈরি এই ই-কেওয়াইসি’র মাধ্যমে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার পাশাপাশি একজনের পরিচয় ব্যহার করে অন্যজন অবৈধভাবে সুবিধাভোগ করার পথ পুরোপুরি বন্ধ করতে সক্ষম হবে সরকার। এতে করে সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের ভাতাভোগীদের কেউ ঠকাতে পারবে না বলে মনে করছেন বিজিডি ই-গভ প্রকল্প পরিচালক তারেক এম. বরকতউল্লাহ।
তিনি জানিয়েছেন, অনলাইনে নাগরিকদের পরিচয় যাচাই (biometrically authenticate) করে, যেকোনো রকমের সরকারি/বেসরকারি সেবার ফর্ম যেন অনলাইনেই মিনিটের মধ্যেই ডিজিটালি স্বাক্ষর করে সাবমিট করতে পারে এ জন্য বিজিডি ই-গভ সার্ট হতে এই প্ল্যাটফর্মটি তৈরী করা হয়েছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্মতারিখ এর তথ্য আর একটি লাইভ ছবি তুলে – realtime-এ machine learning ভিত্তিক অত্যাধুনিক facial-matching প্রযুক্তির মাধ্যমে যেকোন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় যাচাই করা সম্ভব হবে।
সাইবার সুরক্ষায় সরকারের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে অগ্রজ ভূমিকা পালনকারী তারেক বরকত উল্লাহ আরো বলেছেন, এ সফটওয়্যার বিজিডি ই-গভ সার্ট এর সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট টিম নিজেরা গবেষণার মাধ্যমে উন্নয়ন করেছে। এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সরকারি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে e-KYC (Know Your Customer)-র মাধ্যমে সেবা গ্রহণকারীর পরিচয় নিরবিচ্ছিন্নভাবে যাচাই করা যাবে। আপাতত সরকারি ভাবে ব্যবহার করা হলেও এটি সবার জন্যই উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এরইমধ্যে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যেসব প্রতিষ্ঠান ই-কেওয়াইসি সেবা দিচ্ছে তাদের জন্যও এই পথ উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এতে নাগরিকের তথ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে।