ক্লাবে-ফ্লাটে হানার আগেই অনলাইনে শুদ্ধি অভিযান চালানো হলেও দেশ থেকে বন্ধ করা যায়নি জুয়ার সাইট। ভিপিএন ছাড়াই অন্তত ২০টি সাইটে চলছে অনলাইন জুয়া। সূত্রগুলো বলছে, যারা বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে জুয়া খেলতেন তাদের অনেকেই এখন অনলাইনে জুয়া খেলছেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, জালাগাম.নেট/এজেড (www.zalagam.net/az)নামের একটি ওয়েব ঠিকানায় বাংলাদেশ থেকে খেলা যায় এমন ৯টি বেটিং সাইটের নাম ও লিংক দেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে বেট৩৬৫, পিনাকল, বেটসসন, বেটসেফ, ১৮৮বেট, এসবোবেট, বেটএশিয়া ৩৬৫ উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও ওয়ানএক্সবেট নামের একটি ওয়েব ঠিকানায় সবকিছুই মিলছে বাংলায়। এখানে বাজি ধরার নিয়মও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে ডোমেইন ঠিকানায় একটু কারসাজি করে জনপ্রিয় বেটিং সাইটগুলোও চলছে। এর মধ্যে বেটিন ৭-৭। আবার বেট৩৬৫ রিডাইরেক্ট করা হয়েছে নতুন ঠিকানায়। এর বাইরেও চালু রয়েছে বেটএশিয়া৩৬৫ ডটকম, বেট৩৬৫-এর মোবাইল ভার্সন, বেটউইন৩৬৫ ডটএক্সওয়াইজেডসহ আরও বেশকিছু সাইট।
এছাড়াও বাংলাদেশ ডোমেইন থেকে ব্যবহার করা যায় না তার লিংকও সরবরাহ করা হয়েছে জালাগাম.নেট/এজেড ঠিকানায়। এগেুলোর মধ্যে রয়েছে বেটফেয়ার ও বেটওয়ে।
মজার বিষয় হলো গুগলে ‘টপ টেন বেটিং সাইট ইন বাংলাদেশ’ লিখে সার্চ দিলেই সহজেই পাওয়া যাচ্ছে ‘জালাগাম.নেট/এজেড’ বেটিং ওয়েব ঠিকানা ও লিংক নির্ভর সাইটিটি। এই ঠিকানার বাইরে বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া বেশকিছু বেটিং সাইটও কার্যকর পাওয়া গেছে।
অপরদিকে ভারত থেকে পরিচালিত জুয়া খেলার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট তীরকাউন্টার ডটকমের ডেস্কটপ ভার্সন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ করে দেয়া হলেও এরই মধ্যে তীর ডটকম নামের নতুন একটি সাইট চালু করেছে তারা। গুগলে তীর কাউন্টার লিখে সার্চ দিলে প্রথমে এই সাইটটিই আসছে। এছাড়া তীরকাউন্টার ডটকমের বেশকিছু ফেসবুক পেজও চালু রয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় বেট৩৬৫ ডটকমের বেশকিছু সাইট বন্ধ করে দেওয়ার পর তা নতুন করে আর চালু হয়নি। ক্রিকেট বেটিং সাইট, বেস্ট অনলাইন গ্যাম্বলিং সাইট, নেটবেট, এসবিওবেট লিংক, ১৮৮বেটসহ আরও বেশকিছু সাইট বন্ধ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ডিজিবাংলাকে বলেন, ‘আগেই আমরা ২ হাজার সাইট বন্ধ করেছিলাম। আইএসপিএবি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল গাইড লাইন দিয়ে এ জাতীয় ওয়েবসাইট বন্ধ রাখার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। এরপরও যেসব সাইট থেকে এসব চলছে আমরা তা বন্ধ করে দেবো।
তিনি বলেন, আমরা নিজেরাই এসব সাইটের ঠিকানা খুঁজছি। লোকজনও আমাদেরকে জানাচ্ছে। খবর পেলেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে বেটিং সাইটগুলো বন্ধ করে দিচ্ছি। এখন ক্যাশে যেগুলো আছে সেগুলো মুছে ফেলার কাজ চলছে। ভিপিন এর মাধ্যমেও যেন খেলা না যায় সে জন্য অবৈধ বেটিং সাইটের তালিকা করা হচ্ছে। এরমধ্যে কোনো সাইট পেলেই সেগুলো বন্ধ করে দেবো।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো বলেন, চাইলেই আসলে পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে। ক্লিন যাকে বলে তা করা সম্ভব নয়। দুষ্টু লোকেরা প্রযুক্তির ফাঁক ফোকর কাজে লাগাবে। তবে এ বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়েছি।
ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি সূত্র বলছে, বেশিরভাগ সাইটই বাংলাদেশ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারপরও কেউ কেউ ভিপিএন দিয়ে খেলেন। আবার কিছু কিছু নতুন সাইটও তৈরি হয়। সেগুলো বিটিআরসির নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেয়া হয়। বিটিআরসিও এ বিষয়ে কাজ করছে।