নির্দিষ্ট কক্ষপথে ছুটে চলে পৃথিবী। এই একই আবর্তে যেনো ঘুরছে পৃথিবীর বাসিন্দারা। নতুন রূপে ঘুরে ফিরে আসে পুরোনো ট্রেন্ড। তাই হয়তো গ্যাজেট হিসেবে চাহিদার তুঙ্গে উঠেছে আজ থেকে ২০ বছর আগের ডিজিটাল ক্যামেরাগুলো।
গত ১২ মাসে সামাজিক প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘#digitalcamera’ সংশ্লিষ্ট ভিডিওগুলোর ভিউ সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২২ কোটি। বর্তমানে ‘রেট্রো কিট’ হিসেবে বিবেচিত ক্যামেরাটি ব্যবহার করে নিজের টিকটক অ্যাকাউন্টে ৫০ লাখের লাইক পেয়েছেন স্কটল্যান্ডের ‘আইল অফ আরান’ দ্বীপে বসবাসকারী ৩২ বছর বয়সী স্কট ইওয়ার্ট।
স্কট এই অনুসন্ধান শুরু করেন নিজের মা-বাবা’র কাছে থাকা বিভিন্ন পুরোনো ক্যামেরা খোঁজার মাধ্যমে। তবে, দ্রুতই তার সংগ্রহ ছাড়িয়েছে ৩০-এর ঘর।
স্কটের মতো, ইবে ও ইটসি ঘরনার অনলাইন মার্কেটপ্লেসে পুরোনো গ্যাজেট খোঁজার সংখ্যা বেড়েই চলছে দিন দিন। ই-কমার্স সাইট ইবে’র যুক্তরাজ্যের অংশ বিবিসিকে জানিয়েছে, ২০২২ সালের শেষ তিন মাসে লোকজনের এই ধরনের ডিভাইস খোঁজার প্রবণতা বেড়েছে। এর মধ্যে আছে সার্চ ট্রাফিকিংয়ে ‘ভিনটেজ ডিজিটাল ক্যামেরা’ শব্দের ব্যবহার ১৩ শতাংশ ও ‘রিফারবিশড ক্যামেরা’ শব্দের ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি।
হাতে তৈরি ও পুরোনো সামগ্রী বিক্রির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত মার্কেটপ্লেস ইটসি’র ক্ষেত্রেও গত ছয় মাসে এমনটি ঘটেছে। বর্তমানে ডিজিটাল ক্যামেরা সংশ্লিষ্ট ১৯ হাজার সামগ্রী তালিকাভুক্ত আছে সাইটটিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের ব্রুকলিনের ২৫ বছর বয়সী বাসিন্দা কেটি গ্লাসগো নিজেকে ‘জেনারেশন জি’র সম্ভাব্য সবচেয়ে পুরোনো সদস্য’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনিও এখনও তার বাবা মা’র পুরোনো ডিভাইস ব্যবহার করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। তার মতো জি প্রজন্মের মাধ্যমে এই ট্রেন্ডকে শতাব্দী পুরোনো ডিজিটাল সামগ্রীর পুনরুত্থান হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
‘উই আর সোশাল’ নামের ক্রিয়েটিভ এজেন্সি’র গবেষণা প্রধান পল গ্রিনউড বলেন, এটি একটি ‘প্রাকৃতিক চক্র’, যেখানে লোকজনের বয়স ২০-এর ঘর অতিক্রম করলে তারা নিজেদের ‘তারুণ্যের সাংস্কৃতিক স্পর্শ পেতে স্মৃতিকাতর’ হয়ে ওঠে। তাইতো, তুলনামূলক তরুণ ব্যবহারকারী, যাদের কাছে ২০ শতকের জনপ্রিয় ক্যামেরাগুলোর কোন ভার্চুয়াল সংগ্রহ নেই, স্মার্টক্যামেররা যুগেও তাদের বেলায় এক ধরনের ‘নস্টালজিক পৃথিবী’র অনুভূতি দেয় ডিজিটাল ডিভাইস।