এবার চুয়াডাঙ্গার জীবননগর আদর্শ সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজের ডিজিটাল স্ক্রিনে ভেসে উঠল ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’। শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর জীবননগর পৌর সভার লক্ষ্মীপুর এলাকায় ওই কলেজের ডিজিটাল স্ক্রিনে এ লেখাটি ভেসে ওঠে।
অনেকটা ব্লু-হোয়েল গেইমের মতোই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ের ডিজিটাল স্ক্রিনে অনেকটা জ্যামিতিক হারেই বাড়ছে এই ডিজিটাল স্ক্রিন স্ক্যাম।
এর আগে গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের বর্হিগমন পথের ডিসপ্লেতে ‘আওয়ামী লীগ জিন্দাবাদ’ লেখা প্রদর্শন হয়। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত হওয়ার পর তা প্রদর্শন বন্ধ করে দেয়। এরপর গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে মূল ফটকের সামনে ডিজিটাল ব্যানারে ‘ছাত্রলীগ ভয়ংকর রূপে ফিরবে’ বলে একটি লেখা ভেসে ওঠে। একইভাবে গত ৩০ ডিসেম্বর দুপুর ২টা থেকে বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত ফেনী শহরের বড় মসজিদের এলইডি স্ক্রিনে ভাসতে দেখা যায় ‘আওয়ামী লীগ আবার ফিরবে, জয়বাংলা’ লেখা।
চলতি মাসের ১ জানুয়ারি জীবননগরে একটি স্কুলে মূল ফটোকের ডিজিটাল স্ক্রিনে ‘আওয়ামী লীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’ এমন একটি লেখা ভেসে ওঠে। গত ২ জানুয়ারি খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের ডিজিটাল ডিজিটাল বিলবোর্ডের স্ক্রলিংয়ে আপত্তিকর লেখাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কলারোয়া উপজেলার শেখ আমানুল্লাহ কলেজ সংলগ্ন ইউরেকা ফুয়েল পাম্প কমপ্লেক্স জামে মসজিদের ডিজিটাল সাইন বোর্ডে ‘জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা ভেসে ওঠে। গত ৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ডিজিটাল ডিসপ্লেতে ‘আওয়ামী লীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’ লেখা ভেসে ওঠে। গত এরপর শেরপুর পৌর টাউনহল সংলগ্ন ‘রাজ ক্রোকারিজ এন্ড গিফট শপ’র বিলবোর্ডের এলইডি স্ক্রিনে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা ভেসে ওঠে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও কর্মচারীসহ দুইজনকে আটক করে পুলিশ দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
সবশেষ ১১ জানুয়ারির ঘটনা নিয়ে জীবননগর আদর্শ সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম জানান, কলেজের সার্ভারে ডিজিটাল স্ত্রিনে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখাটি হঠাৎ মাগরিবের নামাজের পরে ভেসে ওঠে। স্থানীয়রা দেখেই মোবাইলফোনে কল করে জানালে দ্রুত বিষয়টি আমি জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানাই । পরে জীবননগর ইউএনওর নির্দেশে জীবননগর থানার ওসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সার্ভারটি বন্ধ করে দেন। কিন্তু এটা কীভাবে হলো এটা আমাদের জানা নেই।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডিসপ্লেতে যা দেখানোর কথা তার ব্যত্যয় ঘটাটা অন্যায়। তারওপর নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটিকে বাঁচিয়ে রাখতে এমনটা করা হচ্ছে। কেননা, এই দুর্ঘটনাটি ঘটার পর তা আবার কৌশলে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।