আগামীকাল ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেনের স্মরণে ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ তার বর্তমান রূপে একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলের বাংলাদেশে বিক্ষোভ করার কোনও সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশ নিয়ে কেউ সমাবেশ, সমাবেশ ও মিছিল করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (দিয়ে) পূর্ণাঙ্গ মোকাবিলা করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার কোনও সহিংসতা বা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভঙ্গের কোনও প্রচেষ্টাকে বরদাস্ত করবে না।’
শনিবার (৯ নভেম্বর) বেলা ১২টার পর ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
পোস্টে শফিকুল আলম আরো বলেন, ‘টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশ নিয়ে কেউ সমাবেশ, সমাবেশ ও মিছিল করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ মোকাবিলা করা হবে।’
এর আগে শনিবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। রবিবার (১০ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে নেতাকর্মীদের জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এরই মধ্যে স্থানীয় এক নেতার সঙ্গে কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস হয়। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) শেখ হাসিনার ‘কণ্ঠে’ নতুন ফোনালাপটিতে দলীয় নেতাকর্মীদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি হাতে মিছিল বের করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অডিওতে নূর হোসেন দিবসে নেতাকর্মীদের মিছিল করতে বলা হয়েছে। অডিওতে বলা হয়, মিছিলে তাদের হাতে ট্রাম্পের ছবি থাকবে। এতে যদি কেউ যদি বাধা দেয়, কোনো হামলা করে। তাহলে তো সেটা ট্রাম্পের ছবিতে হামলা হবে। সেই ছবি তোলার জন্য আলাদা লোক থাকবে। তখন সেই হামলার ছবি আমি ট্রাম্পের কাছে পাঠাব। ট্রাম্পের সঙ্গে আমার ভালো যোগাযোগ আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাধা দেওয়ার ছবি ট্রাম্পকে পাঠিয়ে বলা যাবে দেখো ইউনূস সরকার কী করছে। সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার তো ইউনূস। ২৫০ জন এসআইয়ের (ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর) চাকরি দিল না, তাদের বের করে দিল।
তিনি আরও বলেন, মিছিলে ভালো লোক জমায়েত যেন হয়, সে ব্যবস্থা করবা। মিছিলে নূর হোসেনের ছবি থাকবে। ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা প্লেকার্ড রাখবা। আমাদের অনেক ঘরবাড়ি, দোকান-পাট পোড়ানো হয়েছে। এর তথ্য বের করতে হবে। আমরা সব হিসাব কড়ায়-গণ্ডায় করে নেবো।
এই ফোনালাপ বিষয়ে ফেসবুকে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লেখেন, ‘পাশাপাশি এটাও মাথায় রাখতে হবে রক্তের দাগ এখনও শুকায় নাই, খুনীর-লুটপাটকারীর বিচার শুরু হয় নাই, কিন্তু নানা জায়গায় উস্কানী দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ডি-স্ট্যাবিলাইজ করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আপনারা খুনির ফোনালাপ শোনেন। দেখেন সে অনুতপ্ত নাকি আরো খুন করার উস্কানী দিচ্ছে? বিপ্লবের পরে কুলিং পিরিয়ডটা পার হতে দিতে হয়। নাহলে এই অবস্থায় আমি লিবারাল ক্রিটিকের স্পেস কীভাবে আশা করব? এর উত্তর আমি জানি না।’
প্রসঙ্গত., ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সরকার গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়। দলটির বিরুদ্ধে ‘ফ্যাসীবাদী আচরণের অভিযোগ রয়েছে এবং জুলাই-আগস্টের বিক্ষোভ দমনের সময় বিপুল মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটে। ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।