নতুন বাংলাদেশে সদস্যদের আপত্তির মুখে গত মাসের ২০ আগষ্ট হঠাৎ করেই পদত্যাগ করেন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য। এরপর নেতৃত্ব শুন্য হয়ে পড়ে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এই প্রাচীন সংগঠন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির ম্যারিয়ট কনভেনশন সেন্টারে (হ্যাপি আর্কেড) অনুষ্ঠিত হলো জরুরী তলবি সভা।
বিসিএস সভাপতি কাউন্সিলের নেতাদের সঙ্গে এই সভায় অংশ নেন সাধারণ সদস্যরা। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিসহ অন্তর্বতীকালীন সময়ের জন্য স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম-কে বিসিএস’র আহ্বায়ক মনোনীত করা হয়েছে। তিনি ২০২২-২৪ কার্য নির্বাহী কমিটি নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হয়ে পরিচালক মনোনীত হয়েছিলেন।
তিনি জানিয়েছেন, বুধবার পুরো কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির কর্মপরিকল্পনা জানানো হবে।

জরুরী তলবী সভায় উপস্থিত বিসিএস এর সাবেক সভাপতি সবুর খান, শাহিদ উল মুনীর, এস এম ইকবাল, বিগত সময়ের কার্য নির্বাহী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য ছাড়াও ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান শাফকাত হায়দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন শতাধিক সাধারণ সদস্যরাও।
সভায় সবুর খান বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে বিসিএস নেতৃত্বের দুর্বলতার তীর্যক সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি দেশে আইটি খাতের গোড়াপত্তন করে। বিশ্বের আইটি ব্যবসায়ীদের জোট আইটিইউ এর সদস্য। আইটি পণ্য বিক্রেতা হিসেবে আমাদের ট্যাক্স সুবিধা দেয়া হয়েছিলো পরবর্তীতে তা কন্টিনিউ করা হয়নি। আমাদের অনেকেই হাইটেক পার্কে জায়গা নিয়েছে। আমাদের করমুক্তির প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু আপরা তা পাইনি। এমনকি এর জন্য আমরা প্রতিবাদও করতে পারিনি। আমাদের হজম করতে হয়েছে। এখন সময় এসেছে, আমরা সবাই মিলে আপনাদের জন্য কথা বলতে চাই। আমরা চাই আপনারা সবাই সমিতির জন্য সত্যিকার অর্থে কন্ট্রিবিউট করবেন।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতা অভ্যত্থানে বিগত সরকারের দীর্ঘমেয়াদী শাসনামলের অবসান ঘটার পর সরকারি-বেসরকারি বিভন্ন প্রতিষ্ঠানের জরুরী সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে সাধারণ মানুষ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো রাজনীতিকরণমুক্ত করতে আন্দোলন চলছে চারদিকে। সেই সূত্র ধরে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে সক্রিয় করে সেক্রেটারিয়েটকে শক্তিশালী করতে দেশের অন্যান্য ৪টি আইটি সংগঠনের মধ্যে বিসিএস প্রথম এই উদ্যোগ গ্রহণ করলো। এর মধ্যে বেসিস কার্য নির্বাহী কমিটি নিয়ে প্রবল কোনো প্রতিক্রিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে দেখা যায়নি। মধ্যরাতে একসঙ্গে ৫ সদস্যের পদত্যাগের পর ই-ক্যাবের বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে বিক্ষোভের মুখে শীতল ঘুমে আছে আইএসপিএবি’র কার্য নির্বাহী কমিটি। অথচ এই সংগঠটির কার্য নির্বাহী কমিটিতেই রয়েছে প্রবল রাজনৈতিক দলীয়করণের অভিযোগ।