কোরীয় যুদ্ধের ডামাডোলের মাঝে মা-বাবা ও পাঁচ ভাইবোনের সঙ্গে পিয়ংইয়ং ছেড়ে পালান হান মি। তখন তার বয়স ১৩। এখন হানের বয়স ৮৩ বছর। ইতোমধ্যেই সুপারস্টার সিঙ্গার হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন তিনি।
এর মধ্যে আর ফেরা হয়নি নিজভূমে। সাত দশক পর ফিরেছেন নিজের শৈশবের বাড়িতে। বাস্তবে নয়; ভার্চুয়াল রিয়্যালিটিতে।
নতুন এ উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। যার বদৌলতে দেশটিতে থাকা উত্তর কোরিয়ার বয়স্ক উদ্বাস্তুরা বাস্তব-জীবনে পরিবারের সঙ্গে মিলতে না পারলেও ভার্চুয়াল ‘রিইউনিয়ন’ করতে পারছেন।
তাদেরই একজন হান সিএনএনকে জানান, যুদ্ধ থামলেই তার পরিবারের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ১৯৫৩ সালে যুদ্ধ শেষ হলে উত্তর ও দক্ষিণের সীমান্ত দুর্ভেদ্য হয়ে পড়ে। ফলে সেই সীমানা আর অতিক্রম করা হয়নি।
এভাবে হাজার হাজার পরিবার নিজের বাড়ি ও প্রিয়জন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এক সময় একনায়কতান্ত্রিক নেতৃত্বের কারণে সারা দুনিয়া থেকেই উত্তর কোরিয়া বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এর পর অল্প কিছু পরিবারই প্রতিবেশী দেশে থাকা স্বজনদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ পায়। বয়স ও অন্যান্য বিবেচনায় লটারির মাধ্যমে এ ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু দু-দেশের সম্পর্কের অবনতি হলে এক সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৮৯ পরিবার আত্মীয়দের সঙ্গে দেখার সুযোগ পায়। তাদের বয়স প্রায় ৯০ বছর।
সম্প্রতি রেড ক্রসকে বয়স্ক উদ্বাস্তুদের স্বস্তি দিতে ভার্চুয়াল প্রজেক্টে সাহায্য করার অনুরোধ জানায় দক্ষিণ কোরিয়া মিনিস্ট্রি অব ইউনিফিকেশন। এ দায়িত্ব পায় সিউল-ভিত্তিক ভিআর কোম্পানি টেকটন স্পেস। উদ্বাস্তুদের সঙ্গে কথা বলে ভার্চুয়াল জগতে তাদের ফেলা আসা শৈশবের দৃশ্য তৈরি করে। পরে ভিআর চশমা দ্বারা সেই জগতে প্রবেশ করেন তারা।