টেক জায়ান্ট গুগল’র ম্যাপভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে গুগল ম্যাপস উন্নয়নে অবদান রাখা ‘লোকাল গাইড’ মডারেটরদের নিয়ে জাপানের রাজধানী টোকিওতে চলমান কানেক্ট মডারেটর সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে সুমাইয়া জাফরিন চৌধুরী। গত ১৮ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বৈঠকে বিশ্বের ১৯টি দেশ থেকে ৪৩ জন কানেক্ট মডারেটর ও গুগল কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। এটি শেষ হবে আগামী ২১ অক্টোবর।
অবশ্য গুগল’র এনডিএ নীতিমালা অনুযায়ী এই বৈঠকের এজেন্ডা সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি। গুগল না প্রকাশ করা পর্যন্ত বাংলাদেশের বিষয়ে বৈঠকে সুমাইয়া কোন কোন বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গ, ২০১৯ সাল থেকে গুগল লোকাল গাইডসের কানেক্ট মডারেটর হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন সুমাইয়া। এরপর ২০১৫ সাল থেকে গুগল ম্যাপ উন্নয়নে কাজ করে আসছেন। সেই সূত্রধরে ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে অ্যামেরিকার সান ফ্রান্সিসকোতে গুগল হেড কোয়ার্টারে অনুষ্ঠিত লোকাল গাইডস সামিটের জন্য তিনি নির্বাচিত হন।
এছাড়া ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সুমাইয়াকে নিয়ে গুগল লোকাল গাইড থেকে ফিচার প্রকাশ করা হয়। সেখানে তাকে সারা বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ী নারী ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০১৮ ও ২০২৩ সালে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে সুমাইয়া-পাভেল দম্পতিকে নিয়ে ফিচার প্রকাশ করে গুগল। গুগলের অফিসিয়াল ব্লগে ও লোকাল গাইডসের অফিসিয়াল ফোরাম লোকাল গাইডস কানেক্টে ‘মিট দ্য কাপল দ্যাট গাইডস টুগেদার’ শিরোনামে ফিচারটি প্রকাশিত হয়।
২০২০সালের করোনা মহামারীর সময় থেকে লোকাল গাইডসদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গুগল চালু করেছে গাইডিং স্টার অ্যাওয়ার্ড। সুমাইয়া ২০২০ করোনাকালীন নানান উদ্যোগের জন্য হেল্পফুল হিরো ক্যাটাগরিতে গাইডিং স্টার পেয়েছেন। ২০২৩ সালে বাংলা নববর্ষে আবারো লোকাল গাইডস কানেক্টে সুমাইয়া ফিচার্ড হন।
গুগল ক্রাউডসোর্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইন্টারনেটে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন ধরে। এরই অংশ হিসেবে ২০১৮ সালে গুগল ক্রাউডসোর্স থেকে তিনি সেরা কমিউনিটি লিডারের অ্যাওয়ার্ড পান।
ব্যাক্তিজীবনে সুমাইয়া নারীর স্বাধীনতা, সমতা ও উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তা তৈরি, নারীদের উদ্ভাবন ও নারী স্বাস্থ্য সচেতনার সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছেন।
জন্ম দিনাজপুরে, বেড়ে উঠেছেন সৌদি আরবের রিয়াদে। বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, বাবার অনুপ্রেরণাতেই শৈশব থেকেই যুক্ত নানান সামাজিক কর্মকাণ্ডে। বিয়ের পর স্বামী পাভেল সারওয়ারের সংস্পর্শে তথ্য প্রযুক্তিতে অগ্রহী হয়ে উঠেন তিনি।
বর্তমানে তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়ায়, মাস্টার্স ইন ইনফরমেশন টেকনোলজিতে অধ্যয়নরত আছেন ও যুব নেতৃত্বাধীন সংস্থা ইয়ুথ হাবের সাধারণ সম্পাদক, যা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সাথে সঙ্গতি রেখে কাজ করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, নারীদের প্রযুক্তি, বাণিজ্য ও উদ্ভাবনে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি একজন গুগল লোকাল গাইডস হিসেবে গুগল ম্যাপে অবদান রাখতে ভালোবাসেন। তিনি গুগল ম্যাপের মাধ্যমে সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চান।