সেবাকে প্রধান্য দিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক মডেলে ব্যবসা পরিচালনা করতে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) এমদাদ উল বারী।
তিনি বলেছেন, ‘এখন সংস্কারের সময়। কাজ করার সময়। আমি আইএসপিএবি সদস্যদের কথায় সংস্কারের সুর পাচ্ছি না। প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে আমাদের সেবা দিতে হবে। কিন্তু তারা যখন কথা বলেন, তখন তারা শুধু ব্যবসায়ী হিসেবে বলেন। সবাই শুধু চায় নিজের স্বার্থ। আমাদের কোলাবোরেটিভ (সহযোগিতামূলক) মডেলে আসতে হবে। আমিও আইএসপিকেসে মডেলের দিকে আসতে আহবান জানাই। সহযোগিতা করলে দুয়ে-দুয়ে পাঁচ হবে, তিন হবে না। আমাদের প্রায়োরিটি দিতে হবে সার্ভিসকে। সার্ভিস দিতে পারলেই ব্যবসা হবে। ব্যবসাকে বাঁচানোর জন্য সার্ভিস দেব আমরা।’
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে শুরু হওয়া তিন দিনের ‘চট্টগ্রাম আইসিটি ফেয়ার-২০২৫’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় এমদাদ উল বারী আরও বলেন, ‘পৃথিবী অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দেশের ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশ মানুষ এখন যোগাযোগের আওতায় চলে এসেছে। প্রযুক্তির যে একটি সুপ্ত ক্ষমতা আছে সেটা জানার জন্য জ্ঞানের প্রয়োজন।’
আইএসপির ওপর নির্ভর করে একটি ডিজিটাল জগত তৈরি হয়েছে। প্রযুক্তি নিজের গতিপথ খুঁজে নেবে। তাকে আটকানো সম্ভব না। আইএসপিকে বলবো বড় বড় ব্যবসায়ীদের মতো না দেখে সেবা প্রদানকারীর মতো দেখতে- যোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটিকে প্রযুক্তিবান্ধব শহর গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন করপোরেশনের সচিব আশরাফুল আমিন। তিনি বলেন, আমরা একটি প্রযুক্তিবান্ধব শহর গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সেসব করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইএসপি যতটুকু সহযোগিতা করা যায় আমরা করব।’
স্বাগত বক্তব্যে আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া বলেন, তথ্য প্রযুক্তির দিক দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাই। যারা সত্যিকারের তথ্য প্রযুক্তিবিদ তাদেরকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের এখনও লাইসেন্স পেতে অসুবিধা হচ্ছে। আবার নতুন করে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। অথচ এ বিষয়ে কোনো সভাতেই আমাদের ডাকা হয়নি।
এসময় দেশের আইএসপি উদ্যোক্তা শতভাগ দেশীয় উদ্যোক্তা উল্লেখ করে এই শুল্ক-ভ্যাট প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানান নাজমুল।
বক্তব্যে ‘আইএসপির সুযোগ সুবিধা এখন তলানিতে‘ উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেন আইএসপিএবির সভাপতি এমদাদুল হক। তিনি বলেন, এখন এমন একটা পরিস্থিতিতে পৌঁছে যে আমাদের পরিচয় দেওয়ার মতো অবস্থায় রাখেনি। এমন হলে অনেক বড় উদ্যেক্তাও এ সেক্টর থেকে হারিয়ে যাবে। অবৈধ আইএসপি বন্ধ না হলে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে না।
আইএসপিএবি চট্টগ্রামের আহ্বায়ক ও আইসিটি ফেয়ারের সেক্রেটারি রাজিব শাহরিয়ার রুবেন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) শরীফ উদ্দিন, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য নাজিম উদ্দিন এবং সংগঠনের সহ সভাপতি ও চট্টগ্রাম আইসিটি ফেয়ার-২০২৫’র আহ্বায়ক আনোয়ারুল আজিম।