নিজেদের ওয়ালেট ‘আলাপ পে’র সঙ্গে মেট্রোরেল ও অন্যান্য ইউটিলিটি পেমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। গ্রাহকরা যেন একক উইন্ডোতে বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটি পেমেন্ট পরিষেবা নিতে পারেন সে জন্য অ্যাপে নতুন বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
ভয়েস, মেসেজিং এবং অন্যান্য পরিষেবার জন্য ওটিটি অ্যাপ্লিকেশনগুলোর ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাটি ২০২৫ সালে দেশে এবং বিদেশে আরও বেশি ব্যবহারকারীকে আকৃষ্ট করতে তার ডায়ালার “আলাপ” অ্যাপ্লিকেশনটিকে নতুন রূপ দিতে যাচ্ছে।
এ লক্ষ্যে এসএমএস, হোস্টেড আইপি টেলিফোন, ভয়েস ব্রডকাস্ট, বাল্ক এসএমএস, ক্লাউড স্টোরেজের মতো নতুন ফিচার বা সুবিধা সংযোজনের পাশাপাশি কলিং অ্যাপ “আলাপ”-এর জন্য ডেডিকেটেড কাস্টমার কেয়ার সেন্টার খোলার জন্য কাজ করছে বিটিসিএল।
বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার ও ব্রিজের মতো সেবার অর্থ প্রদান করতে বিটিসিএল এর আলাপ ওয়ালেটের মাধ্যমে সমন্বিত একটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকল্পনার মধ্যে, আলাপ ওয়ালেটের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও পানির ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা যাবে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসকে এই তথ্য দিয়েছেন বিটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এই পদক্ষেপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিটিসিএল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা কীভাবে পরিষেবাগুলোর প্রস্তাব করতে পারেন তা নির্ধারণ করতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) সঙ্গে আলোচনা করছেন।
প্রাথমিকভাবে বিটিসিএল তাদের ল্যান্ডফোন বিল পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের সুবিধার্থে তাদের ওয়ালেট ‘আলাপ পে’ তৈরি করেছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ল্যান্ডফোন অপারেটরটি একটি অনন্য গ্রাহকের নম্বরের মাধ্যমে যে কোনো মোবাইল বা ল্যান্ডফোনে কল করার সুবিধাসহ ২০২১ সালের মার্চ মাসে ওভার-দ্য টপ (ওটিটি) কলিং অ্যাপ্লিকেশন ‘আলাপ’ চালু করে।
হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ইমোর মতো অ্যাপগুলো ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, ইন্টারনেটে ফ্রি কল এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করছিল। বিদেশি অ্যাপের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে বিটিসিএল তাদের বাংলাদেশি সংস্করণ “আলাপ” চালু করে।
ইন্টারনেট ব্যবহার করে “আলাপ” থেকে “আলাপ” সংযোগে কথা বলা যায় বিনামূল্যে। কিন্তু অন্য অপারেটর হলে অফনেট কলের জন্য আলাপ ব্যবহারকারীকে দিতে হবে মিনিটে ০.৩৫ টাকা।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত দুই দফায় মোট ২০ লাখ ইউনিক নম্বর বরাদ্দ দেওয়ায় আলাপ নম্বর বরাদ্দের সংকটে ভুগছে। আলাপের এখন মোট গ্রাহক ১৯ লাখেরও বেশি। যার মধ্যে ১৬.৪৯ লাখ ব্যবহারকারীকে এনআইডির মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে এবং আরও ৩.৯৪ লাখ ব্যবহারকারী যাচাইয়ের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন।
এখন আলাপের প্রায় ১৭ লাখ সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ৭ লাখেরও বেশি পেইড কল নিবন্ধন করা হয়। আর ফ্রি কলের সংখ্যা প্রতিদিন ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার। কর্মকর্তারা জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত আলাপ মোট ৩২ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে।