শুক্রবার জুমা’র সময় থেকেই রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ডাটায় মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ফেসবুক ও রাশিয়াভিত্তিক মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুকের মালিকানাধীন ইন্সটাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারেও অনেকের সমস্যা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন অনেকে। অবশ্য কেউ কেউ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে টেক্সট ও ছবি পাঠাতে পারছেন। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে অ্যাপগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে। তবে গতি স্লো হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে মোবাইলে না চলা অ্যাপগুলোর লাইভ ভিডিও ঠিকমতো চলছে না। নতুন ভিডিওগুলোও টাইম লাইনে আসছে দেরিতে।
মোবাইল ইন্টারনেটে ফেসবুক চালাতে না পেরে অনেক গ্রাহকই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালাচ্ছেন। অনেকে ফেসবুকে সমস্যায় পড়া নিয়ে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। একইসঙ্গে লাল ও কালো ব্যানারে ‘নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট চাই, ব্যবসা করে বাঁচতে চাই’ স্লোগানে সোচ্চার হয়েছেন অনেক অনলাইন ব্যবসায়ী। তারা শঙ্কায় আছেন আবারো ইন্টারনেট, ফোসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইউটিউব শাটডাউনের।
ফেসবুক সার্ভারে কোনও সমস্যা হয়েছে কিনা জানতে ‘ডাউনডিটেক্টর’ নামের সাইটে গিয়ে জানা যায়, এই মুহূর্তে কোথাও ফেসবুকের টেকনিক্যাল কোনও সমস্যা কেউ রিপোর্ট করেনি। এছাড়া মেটা তাদের প্রোডাক্টের কোনও ইস্যু বা অভিযোগ এখনও পাচ্ছে না বলে জানায় তাদের নিজস্ব ওয়েব ‘মেটা স্ট্যাটাসে’।
ডিজিটাল মাধ্যমে সংযুক্ত দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মোবাইল ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকায় ফোরজি নেটওয়ার্ক নিয়ে কোনো ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা প্লাটফর্মগুলো বিনা ঘোষণায় না বন্ধ করার দাবিতে এখন সোচ্চার। স্ট্যাটাসেই অনেক ব্যবসায়ী জানতে চাইছেন , ‘আমরা কি ফেসবুকের অ্যাড বন্ধ করে দিবো’?
এ নিয়ে নাম ও পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে অপারেটররা জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনায় বেলা ১২টার পর থেকে ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার ও টেলিগ্রাম বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে দেশের সবচেয়ে বেশি গ্রাহকের মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন এ প্রসঙ্গে জানিয়েছে, “চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায়, কর্তৃপক্ষ মোবাইল ইন্টারনেটে কিছু অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার বন্ধ রেখেছে। এ বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।”
এমন পরিস্থিতিতে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ প্রশ্ন রেখেছেন, সরকার, বিটিআরসি,এনটিএমসি বা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ এর কোন বিধান বলে, বা সাংবিধানিক কোন অধিকার বলে কথায় কথায় ইন্টারনেট বন্ধ করে? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে?
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে দেশে ইন্টারনেটে গতি স্বাভাবিক হচ্ছিল। দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১২ কোটির বেশি। ফেসবুক মোবাইল ডেটায় বন্ধ থাকলে আবার ভিপিএনের ব্যবহার বাড়বে এবং তা ইন্টারনেটের গতির ওপর প্রভাব ফেলবে।
ফেসবুক বন্ধ কিনা জানতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে, কেউ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুলাই রাত ৯টার দিকে সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়। ওই সময় থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ ছিল। ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড এবং ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট সচল করে দেওয়া হলেও বন্ধ ছিল মেটার চারটি প্ল্যাটফর্ম ও টিকটক। তবে এ সময় ইউটিউব চালু ছিল।