সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের জবাবদিহিতা নিয়ে শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁও প্রশাসনিক এলকায় অবস্থিত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ সেমিনার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মিনহাজ উদ্দিন।
এসময় তিনি বলেন, আমরা এখন দু’টি জগতে বাস করছি একটি বাস্তব জগত এবং আরেকটি ভার্চুয়াল জগত। বাংলাদেশে ১২.৬১ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক এবং ১১.৪০ কোটি মোবাইল ফোন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ৬ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। আর এর মাধ্যমে সত্য সংবাদের চেয়ে ছয় গুণ দ্রুত মিথ্যা সংবাদ ছড়াচ্ছে। তাই আমাদের জানতে হবে কীভাবে ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসি’র কমিশনার ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া জনগণকে স্বাধীনতা দেয়। ব্যক্তির বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত হরে। তাই সোশ্যাল মিডিয়া ও এর ব্যবসা নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। দেখা গেছে, যখন এই সোশ্যাল মিডিয়া বাণিজ্যের জন্য বাজারে আসলো তখন আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হলো। আমি বিষয়টি নিয়ে অক্সফোর্ড ও সাউদামটন এ গবেষণা করেছি। তখন দেখেছি, একাডেমিয়ারা এটা কে মতপ্রকাশের বাহন হিসেবে দেখেন। কিন্তু অন্যরা এটাকে পণ্য প্রোমশনের নিয়ামক হিসেবে ব্যবহার করেন। তাই বলা উচিত, ফ্রিডম কনসেপ্ট হিসেবে এলেও আমরা এর ব্যবহার বিষয়ে সতর্ক থাকবে। অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের স্বাধীনতা দেয় এবং বিভিন্ন উপায়ে আমাদের প্রভাবিত করে। তাই আমাদের শিখতে হবে কিভাবে আমাদের সুবিধার জন্য এর ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে।
সেমিনারে আরেকটি উপস্থাপনায় বিটিআরসি’র সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ হারিয়ে যাওয়া ও হ্যাক ঠেকাতে বিটিআরসি কী কী করে তা তুলে ধরেন। জানালেন, কী ভাবে ক্ষতিকর কন্টেন্ট এবং বেটিং সাইটগুলো বন্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হচ্ছে। ডিজিটাল জগতে সবার জন্য সমান ভাবে বিপুল সম্ভাবনাকে নিরাপদ রাখতে মেশিন লার্নিং, এআই এর চ্যালেঞ্জ নিয়েও আলোকপাত করেন তিনি।
তিনি বলেন, ব্লক চেইন প্রযুক্তি আসায় কন্টেন্ট মডারেশন ও কন্ট্রোল বিষয়টি সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের হয়ে উঠবে। বিষয় বা উপাত্ত কোনো রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠানের হাতে থাকবে না। ব্যক্তি যা খুশী তাই করতে পারবে। এখানে ফ্রিডম অব স্পিচ ওপরে যাচ্ছে কিন্তু একইসঙ্গে বাকীদের রিস্কটা ডাউন হচ্ছে। বিষয়টি দিন দিন জটিল হচ্ছে।
বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব এএইচএম বজলুর রহমান গভর্নেন্স অব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ওপর তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বিশ্ব প্রেক্ষাপটে শাসন ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সমস্ত বিশ্ব নেতাদের সমর্থন ছাড়া সামাজিক প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা কৌশল থাকতে হবে। তিনি পরামর্শ দেন যে আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে নিরাপদ করতে বিটিআরসি উদ্যোগ নিতে পারে।