আগামী বছর থেকে আইসিটি বিভাগের ৩০০টি স্কুল অব ফিউচার এ কুমন শিক্ষাক্রম চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন জুনাইদ আহমেদ পলক। বলেছেন, ছোটো বেলায় আমার গণিত ও অংক ভীতি ছিলো। হতে চেয়েছিলাম মাইকেল জ্যাকসন এর মতো রক স্টার। এখন মোবাইলে গেম খেলতে পছন্দ করি। তাই আমি আগামী বছরে ৩০০টি স্কুল অব ফিউচারে কুমন চালু করা হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিটি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবেও চালু করা হবে আনন্দদায়ক এই শিক্ষা। এর মাধ্যমে আরও ১৩ হাজার স্কুলে যুক্ত হবে কুমন।
শনিবার সাভারের বিরুলিয়ার ব্র্যাক সিডিএম সেন্টারে কুমন স্বর্ণ পদক বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তখন একসাথে ১২ টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যার ধারাবাহিকতায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি স্থাপন হয়েছে।
এসময় সংস্কৃত প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, ব্রাক প্রধান নির্বাহী আসিফ সালেহ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সারওয়াত আবেদ, জাতীয় বেস বল টিম কোচ হিরোকি সান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠনে জানানো হয়, দেশের ৫টি ব্র্যাক কুমন স্কুলের ৩৩০ জনকে আজ পুরস্কৃত করা হয়। এর মধে্য ৮৪ জনকে দেয়া স্বর্ন পদক দেয়া হয়। পুরস্কতরা স্কুলের চেয়ে গণিত ও ইংরেজি শিক্ষায়ন ২-৩ বছর এগিয়ে আছে।
গানে গানে শিশুদের জন্য সবুজ বাগান গড়ে তোলার প্রত্যয় জানিয়ে কুমন জয়ীদের অনুপ্রণিত করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তাঁর অনুরোধে সত্য সুন্দর রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। তিনি বলেন, আমি আশা করছি, জাপানি কুমন শিক্ষা পদ্ধতিটি বাংলাদেশের জাতীয় পাঠ্যক্রমেও গ্রহণ করা হবে। ভবিষ্যত দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে এটি আদর্শ মডেল হিসেবে প্রমাণিত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জীবন যুদ্ধ নয়, পরিভ্রমণ। তাই গণিত, ইংরেজি ভাষা ও যুক্তি শিক্ষার মাধ্যমে কগনেটিভ দক্ষতা উন্নয়নে এ বছর আরো কয়েকটি কুমন স্কুল করা হবে বলে জানান আসিফ সালেহ। এই শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করায় বক্তব্যে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী পলককে মন্ত্রীদের মন্ত্রী অভিহিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদও।
তিনি বলেন, জাপানি নাগরিক তরু কুমন ‘কুমন’ পদ্ধতির প্রবক্তা। তার ছেলে তাকেশি গণিতে দুর্বল ছিলেন বলে তার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এ গণিত শিক্ষক ১৯৫৮ সালে অভিনব এ পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা সহজে গণিত ও ইংরেজি শিক্ষা লাভ করতে পারে। বিভিন্ন ধাপ বা লেভেলে শিক্ষার্থীরা ক্রমান্বয়ে এ পদ্ধতিতে এগিয়ে যায়। বর্তমানে বিশ্বের ৬০টি দেশের ৪০ লক্ষ শিক্ষার্থী কুমন পদ্ধতিতে গণিত ও ইংরেজিতে দক্ষতা লাভ করছে।
ব্র্যাক-কুমন আয়োজিত ৪র্থ বার্ষিক ASHR (Advanced Student Honor Roll) সনদ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে কে এম খালিদ আরো বলেন, বাংলাদেশের শিশুদের সহজে গণিত ও ইংরেজি শেখাতে কুমন পদ্ধতির বিস্তার ঘটাচ্ছে ব্র্যাক। সেজন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। প্রতিমন্ত্রী এসময় বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্র্যাকের বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে সুবধা বঞ্চিত শিশুদের ফ্যাবলেট আর সাইলেন্স পেনের মাধ্যমে সম্প্রতি চট্টগ্রামের হালুয়াঘাটে ডিজিটাল কুমন শুরু হয়েছে বলে জানান ব্রাক কুমন প্রধান নেহাল বিন হাসান। তিনি বলেন, আগামী বছরের মধ্যে ১২টি কুমন স্কুল হবে।