সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী সেবার মাধ্যমে ভবিষ্যত জ্ঞান ভিত্তিক সমাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। আর এর মাধ্যমেই ডিজিটাল অর্থনীতিতে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাদইদ আহমেদ পলক। আর তরুণদের মধ্যে উদ্ভাবনার সংস্কৃতিকে বিকশিত করে নতুন প্রজনম্মের ডিজিটাল নেতৃত্ব তৈরিতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, গত এক যুগের জাতীয় উন্নয়নে অভিযাত্রায় ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প এখন আর স্বপ্ন নয়, উদ্দীপ্ত বাস্তবতা। লকডাউনের কারণে যখন গোটা বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় পড়ে তখন বাংলাদেশ প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবনের প্রায় প্রতিটি সুযোগে রূপান্তরিত করেছে। এর ফলে কেবল দেশের অর্থনীতিই নয়, একক ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে গণটিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের বাধাকে অতিক্রম করতে সক্ষম হচ্ছি।
পলক আরো বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে আমরা যে স্বপ্ন বুনছি তা যে যে কতটা টেকসই অর্থনীতি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে পারে তা আজ আমরা অনুধাবন করছি। পরিকল্পনা গ্রহণে আমরা সবসময় এক ধাপ এগিয়ে থাকতে চেষ্টা করেছি। একাডেমিয়ানদের ক্ষমতায়নে আমরা স্কুল ও কলেজগুলোতে স্থাপন করেছি ৮ হাজারের বেশি শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব। এর ৫ হাজারেরও বেশি স্থাপিত হচ্ছে গ্রামে। আরো ১৫ হাজার স্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রযুক্তি সুবিধার বিকেন্দ্রীকরণে নেয়া সরকারের নানা উদ্যোগ তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি শিল্পের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তা মোকাবেলায় ভবিষ্যত প্রজন্মকে গড়ে তুলতে আমরা দেশজুড়ে ৩০০ স্কুল অব ফিউচার স্থাপন করছি। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্থাপিত হচ্ছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী ৩৩টি বিশেষায়িত প্রযুক্তি ল্যাব। নন গ্রাজ্যুয়েট তরুণদের কর্মসংস্থানে দেশের ৬৪ জেলাতেই স্থাপিত হচ্ছে শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন সেন্টার। এই সেন্টারগুলো থেকে প্রাপ্ত থিসিস বা গবেষণা প্রতিবেদনগুলো বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা হবে। এতে নতুন ও মৌলিক উদ্ভাবনার মাধ্যমে বিদ্যমান শিল্পের বাইরে নতুন ব্যবসায় ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার “আইডিয়াথন” বিজয়ী বাংলাদেশি ৫ স্টার্টআপকে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত ডেমো ডে-তে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থনীতিতে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার প্রশংসা করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন। একইসঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে তার দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দক্ষিন কোরিয়ার কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (কেপিসি) এর চেয়ারম্যান আন ওয়াং-জি। এছাড়া, এই আয়োজনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব পার্থপ্রতিম দেব, আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক ও যুগ্ম-সচিব মো: আব্দুর রাকিব।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত ৫টি প্রকল্পের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এনটিটি রোবোটিকস। প্রথম রানার্স আপ হয়েছে রক্ষী লিমিটেড। দ্বিতীয় রানার্স আপ হয়েছে চারছক্কা। চতুর্থ ও পঞ্চম হয়েছে যথাক্রমে কৃষাণ ও ছবির বাক্স। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কোরিয় প্রোডাক্টিভিটি সেন্টারের চিফ ডিরেক্টর পার্ক সাং গুন।