বাংলাদেশের ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রণ প্রায় ৭০ শতাংশ ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়েছিলো বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি নীতি উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। আর এই অবস্থার উত্তরণের জন্য কীভাবে ভারত থেকে সিডিএন, ক্যাশ সার্ভার কিংবা এজ রাউটার/সার্ভার বা পপ গুলো, মেডিয়েশন সার্ভার বাংলাদেশে আনা যায়। ডেটা সেন্টার কীভাবে দেশে আনা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইন্টারনেটে বাংলাদেশের ভারত নির্ভরশীলতার পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ আছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, ৭.২ টেরাবাইটের সাবমেরিন ক্যাবল (সিমিউই-৪, সিমিউই-৫ মিলে) সক্ষমতার মাত্র ২.৭ টেরাবাইট ব্যবহৃত হচ্ছে। বাকিটা ভারত থেকে আইটিসি দিয়ে আসছে। এতে দেশের ইন্টারনেট সিঙ্গেল পয়েন্ট অফ ডিপেন্ডেন্সিতে পৌঁছে যাচ্ছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি ২০২৫) আইসিটি খাতের নানা বিষয়ে ফেসবুক পেজে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে এ তথ্য দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, এই যে বিদেশ থেকে বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক নিয়ে ৯০% বা বেশি তথ্য ভারতীয় সোর্স থেকে দেখানো হয়, তার একটা কারণ হতে পারে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ট্র্যাফিক এর যে অংশ, প্রায় ৭০ শতাংশ আইটিসি দিয়ে কলকাতা বা অন্য ভারতীয় শহর দিয়ে আসে, এবং এই ট্রাফিকের ডিপ প্যাকেট ইনস্পেকশন বলুন কিংবা ইন্টারনেট মেডিয়েশন সার্ভার- সেসব কিন্তু ভারতে অবস্থিত। ফলে আজকে আমাদের ইন্টারনেটের উপরে আমাদের সত্যিকার নিয়ন্ত্রণ নেই। এটা ডিজিটাল এরিনায় আওয়ামী লীগের গোলামি নীতির নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।
আইসিটি নীতি উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বর্তমান আইসিটি ডিভিশনে নাগরিক হয়রানির কোন টুল, কোন প্রসেস আর কার্যকর নেই। সেখান থেকে সোস্যাল মিডিয়া এবং ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না।
তিনি লিখেছেন, ফেসবুক কমেন্টের সূত্র ধরে, কোন নাগরিকের লোকেশন বের করে তাকে গ্রেফতার ও হয়রানি করা- বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতিবিরুদ্ধ। আওয়ামী লীগ আইসিটিতে যা করে গেছে সেসবের চর্চা আমরা করবো না।
একইসঙ্গে ‘হাসিনা- জয়- পলক-জব্বাররা কাদের দিয়ে, কোন মেকানিজমে সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতো সেই মেকানিজম জানা নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘তবে কোন কোন পেইজ থেকে তারা শত শত কোটি টাকা ফেইসবুকে ইনভেস্ট করেছে তার কিছু হিসাব বের করা হয়েছে। প্রথমত, বর্তমান আইসিটি বিভাগের, এই সক্ষমতা নেই। আগে ছিল কিনা, তারা সেসব স্ক্র্যাপ করে গেছে কিনা, তা জানার সূযোগ নাই আমাদের। আমরা শুনেছি- ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারের পেছনের বাড়িতে সিআরআই এর কিছু সেটাপ ছিল বা এনটিএমসির সাবেক ডিজি জিয়াউল আহসানের বাড়িতে এমন সেটাপ ছিল, বিভিন্ন এলইএ’র ছিল। দ্বিতীয়ত, অন্য কোন বিভাগের এই সক্ষমতা থাকলেও আমরা সেটার প্রয়োগ করার বিরুদ্ধে। এটা অপরাধের সমতুল্য। এছাড়াও বিগত সরকারের সময়ে ফেসবুক/মেটা, গুগল/ইউটিউব কোন বিশেষ বন্দোবস্তের মাধ্যমে কাজ করেছে কিনা সেটা আমরা জানি না। আমরা জানতেও চাই না। আমরা জব্বার পলকদের ঘন ঘন তাদের সাথে বসতে দেখেছি। মেটা/ফেইসবুক বাংলাদেশের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্তরা এটা ব্যাখ্যা করতে পারবেন’।