দুর্নীতি ও দলবাজদের বিতাড়িত করে সংস্কারের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর আগাগাঁওয়ে অবস্থিতি আইসিটি টাওয়ার। বিক্ষোভ ভবন থেকে নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়লে দুপুর ২টার দিকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে প্রধান ফটক।
সূত্রমতে, সোমবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সামনে বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার সকাল থেকেই বঞ্চিত কর্মীরা একত্রিত হন। দুপুর ১২টার দিকে তারা অফিসের ভেতরেও এসব বিষয়ে উচ্চস্বরে কথা বলতে শুরু করেন। ১টার দিকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামেন বিক্ষুব্ধরা। এসময় তারা স্বৈরাচারের চামচারা, আওয়ামী লীগের চামচারা হুঁশিয়ার সাবধান, এক ফাইল কয় বছর; ৯ বছর ৯ বছর, শহীদ সাঈদের বাংলায়, স্বৈরাচারের ঠাঁই নাই বলে স্লোগান দেন। স্লোগানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ হাবিবুর রহমানের নাম ধরেও পদত্যাগ দাবি কারা হয়। পাশাপাশি চাকরি স্থায়ী করণের এক দফা এক দাবি তোলেন অস্থায়ী নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মীরা।
এক পর্যায়ে আইসিটি অধিদপ্তরের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত কর্মকর্তারা অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেন। দেশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে অর্ধশতাধিক প্রোগ্রামার ও সহকারী প্রোগ্রামার ব্যানার নিয়ে আইসিটি টাওয়ারের নিচতলায় অবস্থান করেন।
তারা জানান, ২০০৯ সাল থেকে চাকরি করে ১৫ সালে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হওয়ার পরও ২০১৯ সালের আগের কারও চাকরিই স্থায়ীকরণ করা হয়নি। দেশজুড়ের এমন বঞ্চিত ১৬৫ জন প্রোগ্রামার ও সহকারী প্রোগ্রামার রয়েছেন। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে আমাদের ফাইল আটকে রাখা হয়েছে। একেকটা ফাইল প্রসেস করতে ৩০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা দাবি করে ঝুলিয়ে রেখা হয়েছে। ২০১৫ সালে তৎকালীন সচিব শ্যম সুন্দর সিকদার এই প্যাঁচ সৃষ্টি করেন বলে দাবি আন্দলনকারীদের।
তবে তারা কেউই পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। তাদের অভিযোগ, তাদের মাধ্যমে কাজ করিয়ে প্রকল্প এগিয়ে নিতে সময় মতো স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে ইনফো সরকার ২ ও ৩ এর নামে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু তাদের জীবিকার স্থায়ী কোনো সমাধান করা হয়নি। অথচ আইসিটি অধিদপ্তরে ২০১৯ সালে নিয়োগ প্রাপ্ত ও মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রোগ্রামার ও সহকারী প্রোগ্রামারদের দলীয় বিবেচনায় ঠিকই স্থায়ীকরণ করা হয়েছে।
এসব নিয়ে বিকেলে আন্দোলনকারীদের কাছে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের সমস্যার সমাধানে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব রফিক উন নবী, অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান। এরপর কর্মবিরতিতে থাকলেও তারা বিক্ষোভ সমাবেশ স্থগিত রেখেছেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, আগামীকালের মধ্যে কোনো সমাধান না পেলে তারা কঠোর আন্দলনের ডাক দেবেন।
