এবার তিনটি ক্যাটাগরিতে জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন পরিবেশিত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অস্কার খ্যাত আন্তর্জাতিক পুরস্কার ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস-২০২৪) পুরস্কারের জন্য চ্যাম্পিয়ন তালিকায় স্থান পায় বাংলাদেশের তিনটি উদ্যোগ। উদ্যোগগুলোর মধ্যে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ক্যাটাগরিতে শিক্ষা, আর্থিক এবং স্বাস্থ্য সেবায় বিশ্বের একমাত্র লাইফস্টাইল গেটওয়ে হিসেবে অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট এটুআই এর ‘শিক্ষক বাতায়ন’ ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের বয়সন্ধিঃকালীন মেয়েদের ঋতুচক্র ট্রাকিং অ্যাপ ‘ওকে’ এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের আত্মবিশ্বাসী ও সুরক্ষিত উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের বিএনডিএ দলের তৈরি জাতীয় ভিডিও কনফারেন্সিং প্লাটফর্ম ‘বৈঠক’।
এগুলোর মধ্যে এ বছর দেশ থেকে একমাত্র উইনার পদক জয় করে নিয়েছে করোনার সময় থেকে ৫ হাজার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ২৫ হাজারের বেশি মিটিং করা ‘বৈঠক’ প্লাটফর্মটি। বিশ্বের ১০৪টি দেশ থেকে জমা পড়া সহস্রাধিকের বেশি প্রকল্প থেকে এই জয় এসেছে লাল-সবুজের দেশে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাপ্ত ১.৫ মিলিয়ন ভোট ও অন্যান্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশ্বিজয় দেখলো বাংলাদেশ।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে আইটিইউ মহাসচিব ডোরিন বোগদান-মার্টিন এর হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সম্মাননা গ্রহণ করে এই সম্মাননার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়জেদ জয়ের প্রতি কৃতজ্ঞাতা জ্ঞাপন করেন তিনি। পলক বলেন, তিনিই আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রধান প্রকৌশলী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে অতিমারির সময় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে কর্মরত আমাদের দেশের প্রোগ্রামাররা এই উদ্ভাবনী সল্যুশনটি তৈরি করে। এখন এই ভিডিও কনফারিন্সিং টুলটি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হতে চলেছে। আমি আশা করি আমাদের দেশের তরুণ ও চৌকস প্রোগ্রামাররা জাতীয় প্রয়োজন মেটানো পাশাপাশি বিশ্বের জন্য আরো বেশি সুযোগ ও সমাধান দিতে সক্ষম হবে।
সম্মাননা গ্রহণের আগে ডব্লিউএসআইএস+২০ ফোরামের হাই-লেভেল ইভেন্ট এবং মন্ত্রী পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন প্রতিমন্ত্রী পলক। বৈঠকে গ্লোবাল ডিজিটাল গভর্নেন্স প্রসেস, চলমান ট্রেন্ডস অ্যান্ড এমার্জিং টেকনোলজি নিয়ে ডব্লিউএসআইএস এর ২০২৪ সালের কার্যক্রম এবং ২০২৫ পরবর্তী ডব্লিউএসআইএস এর শেপিং দ্য ফিউচার অফ অ্যান ইনফরমেশন সোসাইটি বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় কিভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ই-গভর্নেন্স বৃদ্ধি, সেবা প্রদান এবং ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও সাক্ষরতার উন্নতি হয়েছে তা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। এসময় ডব্লিউএসআইএস এবং আইটিইউ সোসাইটিকে ইন্টারনেট সংযুক্তিকে নাগরিকের মৌলিক অধিকারের হিসাবে বিবেচনা করা এবং উদীয়মান প্রযুক্তির উপর নীতি, আইন, নির্দেশিকা প্রবর্তন এবং আন্তর্জাতিক প্রশাসন গঠনের জন্য একটি ‘বৈশ্বিক সরকার’ এবং ‘অবিচ্ছেদ্য বিশ্ব’ পদ্ধতি গ্রহণের আহ্বান জানান পলক।
এবারের আসরে ১৮ ক্যাটাগরিতে উইনার ৭২টি চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার দেয় আইটিইউ। এজন্য ১০৪৯টি প্রকল্পের মধ্যে প্রাথমিক ধাপে বাছাই করে ৩৬০টি প্রকল্প।