সাইবার জগতের সম্ভাব্য হুমকি ও ঝুঁকি সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে না পারলে পুলিশের সক্ষমতা ও উদ্যোগগুলো বিফলে যাবে এবং অপরাধীরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এজন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ পুলিশেও ডিজিটালাইজড পুলিশিংয়ের পাশাপাশি সাইবার জগতের দিকে মনোনিবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আইজিপি বলেন, জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গে মিল রেখে প্রযুক্তিগত সেবা বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানুষকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন, অনলাইন ইমিগ্রেশন, ক্রাইম ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও ই-ট্রাফিক সিকিউরিটি সিস্টেমে সেবা দেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে সব ধরনের সাইবার হুমকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা জোরদার করার সময় এসেছে। পুলিশ কর্মীদের সক্ষমতা বাড়ানো, ডিজিটালাইজড পুলিশিং, অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি, বিশেষজ্ঞ পুলিশদের মধ্যে সর্বোত্তম অনুশীলনগুলো সময়ের দাবি। এসব উদ্যোগ বিশ্ব পুলিশ নেতাদের বিবেচনা করা প্রয়োজন।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বিভিন্ন দেশের পুলিশ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব পুলিশ একাডেমির (ইন্টারপা) আন্তর্জাতিক ১১তম সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে বাংলাদেশসহ ৪৫ দেশের পুলিশ প্রশিক্ষণ একাডেমির প্রধানরাসহ ১২৭ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
সম্মেলনের সমপানী দিনে পুলিশ প্রধান আরও বলেন, প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির ফলে কয়েক দশক ধরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে অপরাধ এবং অপরাধীদের ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। অপরাধীরা নতুন নতুন পন্থায় অপরাধ করছে। তারা বিশ্বের অন্য দেশে বসেও সাইবার হামলা চালিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করতে পারে। অপরাধীরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে সাইবার হামলা করে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ সবসময়ই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পেশাদার জ্ঞান বাড়ানোর জন্য কাজ করছে। আমরা প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমের বিকাশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
ড. বেনজির বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও তথ্য-প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান বিকাশ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং সাধারণ মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় অনলাইনে সংঘঠিত যে কোনো অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, সাইবার সন্ত্রাসবাদ এবং যে কোনো হুমকি মোকাবিলার সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইন্টারপার সভাপতি ও তুর্কি পুলিশ অ্যাকাডেমির রেক্টর প্রফেসর ইলমাজ লাক, পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার গোলাম ফারুক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন প্রমুখ।