নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করণের পাশাপাশি শক্ত আইন তৈরি এবং জনসচেতনতার মাধ্যমে ব্যক্তগত তথ্যের গোপনীয়তা ও তথ্যসুরক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যে অর্থনৈতিক মূল্য, তা ব্যবহার এবং সংরক্ষণের বিষয়টিও যেন আমলে নেয়া হয় সেজন্যও সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
শনিবার বেসিসের উদ্যোগে ডাটা প্রাইভেসি এন্ড ডাটা প্রোটেকশন নিয়ে অনুষ্ঠিত এক ওয়েবিনারে এমনতর দাবি তুলে ধরেন তারা।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খৈতান এন্ড কো এর পার্টনার সুপ্রতীম চক্রবর্তী।
ওয়েবিনারের তিনি বলেন, কালচার অব প্রাইভেসি আমাদের আস্তে আস্তে ব্যবহারে আনতে হবে, যাতে মানুষ বুঝতে পারে আমরা যে তথ্যটা দিচ্ছি অ্যাপ, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেটার ব্যবহার কিভাবে হচ্ছে তার অপব্যবহার কিভাবে হচ্ছে এবং তার প্রতিরোধ কিভাবে করতে পারি। ডাটা প্রাইভেসি এন্ড ডাটা প্রোটেকশনের অবশ্যই আইন দরকার। এর জন্য নীতিমালা করতে হবে।
ডাটা প্রাইভেসির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ডাটা দেশের বাইরে যেতে পারে, ব্যক্তিগত স্পর্শকাতর ডাটা কিছু কিছু দেশের বাহিরে যেতে পারে এবং ক্রিটিক্যাল ব্যক্তিগত ডাটা কখনোই দেশের বাহিরে যেতে পারে না।
নর্থ সাউথ ইউনির্ভারসিটির প্রফেসর রোকানুজ্জামান ওয়েবিনারে বলেন, ডাটা প্রাইভেসি এন্ড ডাটা প্রোটেকশন আইন করতে হলে আমাদের সবার আগে গ্রাহকের ব্যবহার সর্ম্পকে ধারনা রাখা দরকার, কারণ গ্রাহকের ব্যবহার খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আজ থেকে ১০ বছর পরে ডিজিটাল জীবন ধারায় অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। আইন তো আর দ্রুত পরিবর্তন করা যায় না।
সুপ্রীমকোর্টের লিগ্যাল কাউন্সিলের পার্টনার ব্যারিস্টার মিতি সানজানা অনুষ্ঠানে বলেন, বিশ্বের ৯০ ভাগ দেশ ডেটা প্রাইভেসি নিয়ে কাজ করে। বাংলাদেশ যে ডেটা প্রাইভেসি নিয়ে কাজ হচ্ছে না তা বলা যাবে না। ডেটা প্রাইভেসির জন্য নীতিমালা আছে তবে সময়ের প্রয়োজনে তা ঢেলে সাজাতে হবে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্যাংক এখন ওপেন ব্যাংকিং হয়ে গেছে, আমরা এখন ব্যাংকের মধ্যে সীমাবন্ধ নাই। আমরা এখন যুক্ত হচ্ছি ফিনটেকের সাথে তাই এখন অনেক ডাটা নিয়ে কাজ করতে হয়। ফলে কার যে কি দায়িত্ব সেটার ডাটা মনিটরিং করা, ডাটা গভর্নেন্স থাকতে হবে। ডাটা গভর্নেন্সের জন্য একটি অর্থরীটি থাকা প্রয়োজন।
অনলাইন এই বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন- ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি শামস মাহমুদ, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (এমটব) সভাপতি মাহতাব উদ্দিন, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব. সাইবার সিকিউরিটি এন্ড ক্রাইম বিভাগের অ্যাডিশনাল ডেপুটি পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায়, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির ডিরেক্টর জেনারেল রেজাউল করিম, এটুআইয়ের চিফ টেকনোলজি অফিসার মোহাম্মদ আরফে এলাহী, এলআইসিটির পলিসি এডভাইজার সামি আহমেদ এবং সুপ্রীমকোর্টের এডভোকেট ব্যারিস্টার তানজিব-উল আলম।