সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি করছে সরকার। কোটা সংস্কারের রায়ের তারিখ এগিয়ে আনার উদ্যোগের সঙ্গে এটি সংস্কারে নিজেদের নীতিগত সম্মতিও জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
অপরদিকে সরকারের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ‘লাশের ওপর দাঁড়িয়ে আলোচনায় বসব না’। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক সংবাদমাধ্যমকে এবং নিজেদের ফেসবুক পোস্টে একথা বলেন।
তবে বেলা পৌনে তিনটার দিকে সংসদ ভবনে থেকে বেরিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীদের আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পিতৃতূল্য হিসেবে আমি অনুরোধ করছি, আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা আন্দোলন থেকে সরে আসেন।’
কোটা সংস্কার বিষয়ে আপনারা একমত কি না— সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমরা কোটা সংস্কারের ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত। তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসতে রাজি সরকার। শিক্ষার্থীরা চাইলে আজই আলোচনায় বসতে রাজি সরকার।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, এ আলোচনার জন্য দুজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, তাঁকে ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শুনানি এগিয়ে আনতে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে দায়িত্ব দিয়ে এ কমিটি গঠনের প্রস্তাব প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। আশা করি, তিনি বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন।
কোটা সংস্কারের দাবিতে কয়েকদিন ধরে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়েকজনের প্রাণহানি হয়েছে।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, গুলির সাথে কোনো সংলাপ হয় না। এই রক্তের সাথে বেইমানি করার থেকে আমার মৃত্যু শ্রেয়!
উমামা ফাতেমা নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আন্দোলনকারী সমাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, “আমি উমামা ফাতেমা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২৩ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক কমিটির একজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। একটু আগে দেখলাম কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে সরকার আলোচনায় বসার কথা বলছে।
১২টা লাশের উপর দাঁড়ায়ে কিসের আলোচনা? খুনিদের সাথে কোনো সংলাপ হবে না। খুনিদের সাথে কোনো আপস হবে না। ”