২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন হতে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার। টানা চতুর্থ মেয়াদে গঠিত সরকারের প্রথম বাজেট এটি। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলীরও প্রথম বাজেট এটি। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় তিনি প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাজেট অধিকতর অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইট এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট -এ বাজেটের সব তথ্য ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল পাওয়া যাবে। যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এসব দলিল পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবে। এ ছাড়া দেশ ও বিদেশ থেকে যে কেউ বাজেট সম্পর্কে মতামত ও সুপারিশ দিতে পারবেন। এছাড়াও ই-মেইলের মাধ্যমে মতামত ও সুপারিশ দেওয়া যাবে।
বাজেট উপস্থাপনের পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার ৭ জুন বেলা তিনটায় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট–উত্তর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী নতুন বাজেটের বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখাই হবে আগামী বাজেটের মূল লক্ষ্য। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও থাকছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের আদায়ের লক্ষ্য থাকবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা কর আদায় করা। বাকিটা মিলবে রাজস্ব বোর্ড-বহির্ভূত খাত থেকে।
লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, রাজস্ব আদায় হলেও বড় অঙ্কের ঘাটতি থাকবে নতুন বাজেটে। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি পূরণে সরকার ঋণ নিতে চায় অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ও বৈদিশিক খাত থেকে। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে নিতে চায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিতে চায় ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বাজেটে অর্থের জোগান দিতে সরকারকে এখন আগের চেয়ে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। ফলে বাড়ছে ঋণ পরিশোধের চাপ। পাশাপাশি ডলার-সংকট ও ডলারের বাড়তি দাম সরকারকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আরও বেশি চাপে ফেলেছে। আগামী অর্থবছরের জন্য সুদ পরিশোধে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। অর্থাৎ নানা অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের। আর সে জন্য তিনি দেশের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করতে চান ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
আগামী বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে আনবে সরকার। চলতি অর্থবছরের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।