স্মার্ট কর্মসংস্থান গড়তে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বগুড়াবাসীর জন্য ৫ সুসংবাদ
দায়িত্বশীল হিসেবে যারা চাকরি সন্ধানীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং বেকারত্বের সমাধান পথ হিসেবে চাকরি বা সার্টিফিকেট পোড়ানো কিংবা সরকারকে গালি দেয়ার পরিবর্তে তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে হিসেবে বিপুল কর্মসংস্থান তৈরিতে কাজ করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বগুড়াসহ দেশজুড়ে স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আশ্বাস দিয়েছে শিগগিরই জেলায় ১০০ একর জায়গা জুড়ে বগুড়া শিল্পনগরী-২ হিসেবে হাইটেক পার্ক স্থাপনের মাধ্যমে সেখান থেকেই মোবাইল, ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের মতো হার্ডওয়্যার ম্যানফ্যকচারিং প্লান্ট স্থাপনের।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভাগের উদ্যোগে শনিবার বগুড়া স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলা-২০২৩ ও বগুড়া জেলার স্মার্ট নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণী অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘আমি বগুড়া এসেছি প্রবলেম সলভ করকতে’।
অনুষ্ঠানে ১১ জন তরুণ-তরণী প্রতিমন্ত্রীকে নানা প্রশ্ন করেন। তাদের উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠানে ‘চকলেট উপহার’ দিয়ে তরুণদের পিছিয়ে থাকার কারণ তুলে ধরে পলক বলেন, কর্মসংস্থান মেলায় আমরা চাকিরি প্রার্থী ও দাতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দেই। এর পরে যারা চাকরি পায় না তদের দক্ষতা উন্নয়নে সেশন নেই। কিন্তু এ সময় উপস্থিতি অর্ধেক কমে যায়। আজকে যখন আমি ১৫টি চকলেট নিয়ে তোমাদের বললাম, প্রথমে দুই জন এটি প্রথমে নিতে পারলো। তার সাফল্য দেখে আরো ১০জন অনুসরণ করলো। উপস্থিত বাকি ৯৫০জন বসে বসে কেউ ভেবেছে, যাওয়া ঠিক হয়েছে কিনা, কেউ ভাবলো আমি উঠে গিয়ে কী করবো। কারো হয়তো লজ্জা লাগছে। এভাবেই আমরা পিছিয়ে পরি। তাই কোনো কিছু অর্জন করতে হলে যে সুযোগ সামনে আছে সেটি কাজে লাগাতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে জেলার ৪০ লাখ মানুষের জন্য ৫টি সুখবর দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। সুখবরগুলোর মধ্যে রয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবায়নে অর্থায়ন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে ৫০০ নারী উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পর ল্যাপটপ উপহার, আগামী অর্থ বছরে আরো ২০৬টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও ৭টি স্কুল অব ফিউচার প্রতিষ্ঠা, স্থানীয় ১ হাজার ব্যক্তিকে চার ক্যাটাগরিতে উচ্চতর প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ, আগামী ছয় মাসের মধ্যে জেলার ৭টি উপজেলাতেই জয় সার্ভিস ইমপ্লয়েমন্ট সেন্টার স্থাপন এবং খুব অল্পসময়ের মধ্যে বগুড়া সদরে ১৪ একর এলাকায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারের কাজ শুরু করা। এছাড়াও শিগগিরই বঙ্গবন্ধুর নামে বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চালু করার কথাও বলেন প্রতিমন্ত্রী।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বগুড়া ৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন বগুড়া ৬ আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জু, বগুড়া চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন, শেখ রাসেল ডিজিটাল প্রকল্প পরিচাল, এস এ এম রফিকুন নবী লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প প্রকল্পপ্রকল্প পরিচালক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে এলইডিপি প্রকল্প থেকে থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ফ্রিল্যান্সার সুরাইয়া তাবাসসুম ও আশিকুর রহমান উদ্যোক্তা হিসেবে তাদের সফলতার গল্প তুলে ধরেন। আর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বগুড়া জেলার ৪৮ জন স্মার্ট নারী উদ্যোক্তাকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক তুলে দেন এবং এলইডিপির আওতায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের মধ্যে ল্যাপটপ বিতরণ করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। পরে প্রতিমন্ত্রী বগুড়া জেলার আরো ছয়টি উপজেলার জয় সেট সেন্টার ডিজিটালি উদ্বোধন করেন।
মেলায় সরকারি ও বেসরকারি মোট ৩৩ প্রতিষ্ঠান স্টল স্থাপন করে। প্রায় চাকুরী প্রার্থী ৬ হাজার জন তরুন -তরুনী অনলাইন ও অফলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেন। স্পটে সাক্ষাতকার গ্ৰহন করে যোগ্যতা অনুযায়ী ৩০ জনকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর প্রদানের জন্য নির্বাচন করা হয়। বাকিদের যওগ্যতআ অনুমতি চাকরি দেয়া হবে।