আগামী ১৩ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বসছে এ বছরের ওয়েব শীর্ষ সম্মেলন। ধারণা করা হচ্ছে, এবার ২ হাজার ৩০০ উদ্যোক্তা এবং প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৭০ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেবেন সম্মেলনে। তবে গাজায় হামলাকে কেন্দ্র করে সম্মেলনের একজন আয়োজক ইসরায়েলের সমালোচনা করায় আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় বার্ষিক আয়োজনে যোগ দেবে না মেটা ও গুগল।
শুক্রবার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মেটার মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনে আমরা আর উপস্থিত হচ্ছি না’। চলতি বছরের অনুষ্ঠানে তাদের প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রতিনিধিও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনের সহপ্রতিষ্ঠাতা আইরিশ উদ্যোক্তা পেডি কসগ্রেভ গত ১৩ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে ‘পশ্চিমা দেশগুলোর সরকার ও নেতারা যেসব বাগাড়ম্বর করছেন এবং যে ধরনের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন, তা নিয়ে তিনি মর্মাহত’ বলে মত প্রকাশ করেন।
কসগ্রেভ লিখেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধকে যুদ্ধাপরাধই বলতে হবে, তা মিত্ররা করলেও। তারা যা, তাদের সে নামেই ডাকতে হবে।’
কিন্তু কসগ্রেভের এই মুক্তমত প্রকাশে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো। সেই সূত্র ধরে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ইন্টেল ও জার্মানভিত্তিক সিমেন্সও ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার কথা জানিয়ে দেয়। এ ছাড়া মার্কিন কৌতুকাভিনেতা অ্যামি পোয়েলার এবং এক্স ফাইলস অভিনেত্রী গিলিয়ান অ্যান্ডারসনও ওই সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
অবশ্য, গত মঙ্গলবার কসগ্রেভ তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি, যে কথা বলেছি, যে সময়ে বলেছি এবং যেভাবে তা উপস্থাপিত হয়েছে, তাতে অনেকের অনুভূতিতে প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে। আমার কথায় যাঁরা মনে আঘাত পেয়েছেন, তাঁদের কাছে গভীরভাবে ক্ষমা চাইছি। এ সময়ে সহানুভূতি জানানো প্রয়োজন, যা আমি জানাতে পারিনি।’
কসগ্রেভ আরও বলেন, তিনি ইসরায়েলের ওপর হামাসের ‘ভয়াবহ, জঘন্য ও দানবীয়’ হামলার ঘটনায় খোলাখুলি নিন্দা জানাচ্ছেন এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলের ‘টিকে থাকার ও আত্মরক্ষার অধিকারকে’ সমর্থন করছেন।
কসগ্রেভ মনে করেন, ইসরায়েলের উচিত জেনেভা কনভেনশন মানা ও যুদ্ধাপরাধ না করা।