বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য ল্যাপটপ, স্ক্যানারসহ অন্যান্য উপকরণ দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহায়তা করছে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপি। ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য নির্বাচন কমিশনকে প্রাথমিকভাবে ১৭৫টি ল্যাপটপ, ২০০ ডকুমেন্টস স্ক্যানার ও ৪ হাজার ৩০০ ব্যাগ দিয়েছে ইউএনডিপি। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) উপকরণগুলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের কাছে এগুলো হস্তান্তর করেছেন সংস্থাটির বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
ইসি সূত্রে জানাগেছে, আগামীকাল ২০ জানুয়ারি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এই কার্যক্রম চলবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এর বিভিন্ন কেন্দ্রে ছবি তোলে ও চোখের আইরিশ এবং দশ আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করবে সংস্থাটি। এসব কাজে ল্যাপটপ, স্ক্যানার কাজে দেবে।
এসব ডিভাইস হস্তান্তরের সময় ইউএনডিপি আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী ইউএনডিপি পর্যালোচনা করছে কিভাবে সহায়তা দেওয়া যায়। রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটিসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করছে। এরই অংশ হিসেবে ভোটার তালিকা হালনাগাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে এই সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করবে ইউএনডিপি।
আর সিইসি বলেন, কোনো রাজনৈতিক বক্তব্যের ভেতরে ঢুকতে চায় না ইসি। সরকারের সময়সীমা অনুযায়ী ভোটের দিকে এগুচ্ছে ইসি। বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকবে এবারের ভোটার তালিকা।
সিইসি বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ ২০ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে। তাই আজ কয়েকশ ল্যাপটপ, স্ক্যানার ও ক্যামেরা ইউএনডিপি দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এগুলো আসতেই থাকবে। পুরো নিবন্ধন কার্যক্রমে তারা আশা করি সহায়তা দেবে। জাতীয় নির্বাচনে সহায়তার জন্য তাদের নিড অ্যাসেসমেন্ট টিম আসছে। তো তারা যে একটা সহায়তা দেবে, সেটা আমরা বুঝতে পারছি। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অনেক কিছু লাগে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে সন্দেহ দূর করতে আমরা কাজ করছি। কাল থেকে মাঠে নামাচ্ছি। আশা করছি সন্দেহ দূর হবে। আমরা ছয় মাসের মধ্যে হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ করার চেষ্টা করব। ভোটার প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। ৬৫ হাজার লোকবল কাজ করবে। হিউজ প্রোগ্রাম নিয়েছি যাতে নির্দিষ্ট সময়ের শেষ করতে পারি। সাভারে উদ্বোধন হবে।
এর আগে ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ বিষয়ে বলেছিলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের পর সাধারণীকরণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে ইউএনডিপি। এছাড়া হালনাগাদ কার্যক্রমে আমাদের কিছু উপকরণের ঘাটতি আছে, সেগুলো দেওয়ার জন্য বলেছি। ঘরে ঘরে গিয়ে তথ্য আমরা আনার পর কাস্টমাইজেশনে তারা সহায়তা করবে। সহায়তাটা হচ্ছে কারিগরি সহায়তা। হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন, যোগাযোগ, এসডিজির কিছু লক্ষ্য আছে সেগুলোতে তারা সহায়তা করবে। প্রযুক্তিগত বিষয়টা হচ্ছে সফটওয়্যারের কোনো উন্নয়ন যদি করা যায়। কারিগরি সাপোর্ট, প্রশিক্ষণ সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাপোর্ট চেয়েছি।
ইউএনডিপি বরাবর ইসিকে নানা সহায়তা দিয়ে আসছে। এর আগেও অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও নির্বাচনী সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করে সংস্থাটি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদেও সংস্থাটি সহায়তা করবে। এরই মধ্যে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তারা বৈঠক করেছে।
আগামী ডিসেম্বরকে লক্ষ্য রেখে এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।