নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে চলমান বাণিজ্যমেলায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় ই-টিকিটিংয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন দর্শনার্থীরা। তাদের অভিযোগ, সার্ভার গোলযোগ, ভিড়, মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যায় অনলাইনে টিকিট কাটতে আধাঘণ্টার বেশি সময় ক্ষেপন হচ্ছে তাদের।
বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে জানাগেছে, প্রথমবারের মতো দর্শনার্থীদের মেলায় প্রবেশের সুবিধার্থে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করা হলেও তাদের সচেতনতা ও ডিজিটাল ব্যবস্থায় অভ্যস্ত না হওয়ায় চলমান সঙ্কট দেখা দিয়েছে। মূলতঃ একইসময়ে একই স্পট থেকে ২০-৩০ হাজার মানুষ নিবন্ধন করায় এই সমস্যা হচ্ছে।
মেলাপ্রঙ্গন ঘুরে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টারের পাশাপাশি ই-টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা অনলাইনে কিংবা মোবাইলে কিউ আর কোড স্ক্যান করার মাধ্যমে টিকিট কেটে মেলায় প্রবেশ করতে পারছেন।
তবে শুক্র ও শনিবার মেলার মূল ফটকে সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, টিকিট কাটতে গিয়ে বার বার নেটওয়ার্ক হারাচ্ছেন। সার্ভার এরর দেখাচ্ছে। দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টিকিট কাটার সার্ভারে গোলযোগ থাকায় তারা স্ক্যান করার পরেও টিকিট কাটতে পারছেন না। আবার প্রচুর ভিড় থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কও ঠিক মতো কাজ করছে না। ফলে মেলায় প্রবেশে ই-টিকিটিং সুবিধার বদলে ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। নিয়াজ মোর্শেদ নামের একজন বেসরকারি চাকুরিজীবি বললেন, ছুটির দিনটি আমাদের জন্য মেলায় আসার জন্য সুবিধা জনক সময়। কিন্তু কুড়িল থেকে বিআরটিসি বাসে আসার যে ভোগান্তি তার থেকে মেলায় প্রবেশে আরও বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কাউন্টারে লম্বা লাইন দেখে ভাবলাম অনলাইনে টিকিট কাটি। কিন্তু সার্ভার সমস্যার কারণে তা আর সম্ভব হলো না। ফলে প্রায় ৩০ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে কাউন্টার থেকেই টিকিট কাটতে হলো।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান জানালেন, প্রথমবারের মতো অনলাইনে টিকিট কেটে বাণিজ্যমেলায় প্রবেশ করার ইচ্ছা ছিল। তবে অনলাইনে টিকিট কাটার দক্ষতা তেমন নেই তাই নিজে কাটতে পারিনি। পরে মেলার গেটে বুথ থেকে কেটে কিউআর কোড স্ক্যান করে প্রবেশ করেছি।
আলাপকালে জানাগেছে, ঘরে বসেই টিকিট কেটে মেলায় প্রবেশের সুযোগ থাকলেও বেশিরভাগ দর্শনার্থীকেই দেখা গেছে মেলায় গিয়ে ই-টিকিট কাটতে। ফলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার বিড়ম্বনা থেকে দর্শনার্থীদের মুক্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না।
এ বিষয়ে ই-টিকিট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ডিজি ইনফোটেকের পরিচালক নাসির উদ্দিন আহমেদ ডিজিবাংলা’র এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, এবার প্রথমবার হওয়ায় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা হচ্ছে। আবার শুক্রবার, শনিবার সরকারি ছুটির দিনেই মূলত এটা হচ্ছে। তবে আমাদের সার্ভারের সক্ষমতার কারণে এটা হচ্ছে না। একইসঙ্গে দুই লাখ হিট নেয়ার মতো সক্ষমতা রয়েছে। তারপরও মেলা প্রাঙ্গণে এসে অনলাইন টিকেট কাটার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক জটিলতা ও একই স্থানে বিপুল সংখ্যক মোবাইল থেকে একই সময়ে অনলাইন অ্যাপে ঢোকার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা বা জটিলতা দেখা দিতে পারে। সংশ্লিষ্ট সকলকে তাই ঘরে বসে আগে থেকেই নিচের লিংক ব্যবহার করে অনলাইন বা ই টিকেট সংগ্রহ করার ও আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট উপভোগের বিনীত অনুরোধ করছি।
‘ইন্টারনেটে ঢুকে ditf2025.com ব্রাউজ করে সহজ কয়েকটি ধাপ পার হলেই মোবাইল ফোনে টিকেটের কিউআর কোড ও অন্যান্য তথ্য চলে আসবে। মেলার প্রবেশপথে মোবাইল ফোনে আসা এই কিউআর কোড এবং তথ্য স্ক্যান করা মাত্র দর্শনার্থীরা ঢুকতে পারবেন’- যোগ করেন তিনি।
এ নিয়ে প্রযুক্তিবিদরা মনে করেন, সচেতনতা বাড়িয়ে ঘরে থেকেই অনলাইন টিকিট কাটা এবং ই-টিকিটধারীদের বিশেষ ফটকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রবেশের সুযোগ করলে সাময়িক সমস্যাটি থাকবে না। এছাড়াও ই-টিকিটিং নিয়ে ব্যাপক প্রচারণায় দর্শনার্থীদের প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে। একইসঙ্গে একইস্থান থেকে বারবার ই-টিকিট কাটারা চেষ্টা না করে মূল ফটক থেকে একটু দূরে গিয়ে চেষ্টা করলে বিড়ম্বনা কমতে পারে।