সচিবালয়ে লাগা আগুন পরিকল্পিত হতে পারে। কারণ আগুনটা লেগেছে ছয় তলা, নয় তলার পাশাপাশি মাঝেও৷ এভাবে বিভিন্ন স্থানে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন কখনো লাগে না। এটা পরিকল্পনা মাফিক হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ-বাহিনীর সিনিয়র চিফ পেটি অফিসার (পিও) আমিনুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ের ৭ নং ভবনে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তায় ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় নৌ-বাহিনীর একটি টিমকে।
এসময় আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, যেখানে যেখানে আগুন লেগেছে সব পুড়ে গেছে। আমরা সব এখনো আইডেন্টিফাই করতে পারিনি, তবে করবো। আমাদের নৌ-বাহিনীর টিম এখানে আছে, কাজ করছে।
কেন মনে হচ্ছে এটা পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড? জানতে চাইলে নৌ-বাহিনীর সিনিয়র চিফ পেডি অফিসার বলেন, শর্ট সার্কিটের আগুন লাগে এক জায়গা থেকে, সব জায়গায় একসঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে না।এটা হয়েছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। এই আগুন একসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে লেগেছে। ভেতরের যত নথি-পত্র আছে, সব পুড়ে গেছে। আগুন যেখানেই লেগেছে পুড়ে গেছে। এখনো কাজ চলছে।
একজন অগ্নি নির্বাপনের স্বেচ্ছাসেবী বললেন, রাত থেকেই আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। ৬ তলা, ৭ তলা ও ৮তলা পুরে ছাই হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহদয় ওগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেছেন।
পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছেন, ভবনটির ষষ্ঠ তলায় আগুনের সূত্রপাত। সেখান থেকে ওপরের দুটি তলায় আগুন ছড়িয়েছে। নিচের তলাগুলোতে আগুন তেমন প্রভাব রাখতে পারেনি।
দমকল কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে জানাগেছে, সাত তলা ভবনটির দুটি তলা পুরোপুরি এবং একটি তলা আংশিক পুড়ে গেছে। এই তিনটি তলায় যেসব দফতর রয়েছে, সেগুলোর দায়িত্বে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের দুই তরুণ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এদের মধ্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম অফিস করেন সপ্তম তলার একটি অংশে। আর এই মন্ত্রণালয়ের ৫ম তলায় বসেন সচিব ড. মোঃ মুশফিকুর রহমান। অবশ্য এই তলা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা যায়নি।

তবে বাইরে থেকে দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ তলার জানালা ভেঙ্গে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করতে হয়েছে। সেখানে ৪-৫টি এসি পুড়েছে।
দুর্ঘটনাটিকে নাশকতা আশঙ্কা করে এ নিয়ে ফেসবুক পোস্টে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া লিখেছেন, ‘আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এখনো জানা যায়নি। আমাদের ব্যর্থ করার এই ষড়যন্ত্রে যে বা যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না। এই মুহূর্তে আছি নীলফামারিতে, যত দ্রুত সম্ভব ঢাকা ব্যাক করছি।’
‘স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বিগত সময়ে হওয়া অর্থলোপাট, দুর্নীতি নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম। কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাটের প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল। আমাদের ব্যর্থ করার এই ষড়যন্ত্রে যে বা যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।’