টেকনিশিয়ান নয় টেকনিক্যাল হিসেবে মর্যাদা নিয়ে সুষ্ঠুভাবে দায়-দায়িত্ব পালনের জন্য স্বতন্ত্র আইসিটি ক্যাডার সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন গভর্নমেন্ট আইসিটি অফিসার্স ফোরাম। এই ক্যাডার গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো তহবিল তছরুপ কিংবা আইসিটি’র বিভিন্ন প্রকল্পের দুর্নীতি ও অযোগ্যাতা দূর করে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা আনা হবে বলে মনে করে সংগঠনটি। তারা মনে করেন দেশে প্রতিবছর যে বিপুল সংখ্যক সিএসই গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে তাদের যথাযথ মেধাবীদের মূল্যায়ন সম্ভব হবে এই ক্যাডারের মাধ্যমে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাওরান বাজারের বিটিএমসি ভবনের রুফটপে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই যুক্তি তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি মোঃ তমিজ উদ্দিন আহমেদ।
সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাদের হাত দিয়ে এই কাজটা হবে গত চার বছর আগে বাস্তবায়ন হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনটি মহাসচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বিভাগের সিস্টেম এনালিস্ট মোহাম্মদ আহসান হাবীব সুমন।
এসময় সংগঠনের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেন সহ সভাপতি মনির হোসেন ও রায়হানুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ জিকরে আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেন ক্যাডার দরকার প্রশ্নের জবাবে তমিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আইসিটি সেক্টরে কাঠামোগত সংস্কার না হওয়ার ফলে একদিকে দেশের মেধাবীরা বিদেশমুখী হচ্ছে, ফলে মেধার পাচার হচ্ছে। অন্যদিকে দেশে বিদেশি পরামর্শক ও বিদেশনির্ভর প্রযুক্তির প্রচলন বাড়ছে। আইসিটি সেক্টর থেকে দেশের জন্য যারা কাজ করছে তাদেরও চাকরিতে প্রত্যাশিত পদোন্নতিসহ ক্যারিয়ার পাথ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় বদলী না থাকায়, তারাও দিনে দিনে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে এবং তাদের কর্ম দক্ষতা হ্রাস পাচ্ছে। মেধা পাচার রোধ, মেধাবীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি দেশের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ দিতে, নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও দেশীয় প্রযুক্তির প্রচলন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, সাইবার স্পেস সুরক্ষা ইত্যাদি কারণে আইসিটি ক্যাডার সৃষ্টি সময়ের দাবি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে কুচক্রী মহলের প্রতি হুশিয়ারি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগে বাক স্বাধীনতা ছিলো না। কিন্তু বীর ছাত্রদের আত্মাহুতি ও ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত এই দেশে এখন বাক স্বাধীনতা আছে। ফলে জাতির কাছে আইসিটি ক্যাডার-সৃজনে পরিকল্পিত বাধাদানকারীদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে।
বক্তারা বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সরকার যে বিভিন্ন সেক্টরের কাঠামোগত সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানে আইসিটি ক্যাডার সৃষ্টি ২০২৪ সালের রাষ্ট্রীয় সংস্কারের অন্যতম ও অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে পারে। এক্ষেত্রে আইসিটি ক্যাডার সৃজনসহ বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত সকল আইসিটি কর্মকর্তাদেরকে প্রস্তাবিত আইসিটি ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আইসিটি ক্যাডার সৃষ্টিসহ বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত সকল আইসিটি কর্মকর্তাদেরকে প্রস্তাবিত আইসিটি ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তকরণের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।