অনলাইনে নমিনেশন দাখিল অব্যাহত রেখে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার অপটিমাইজ করার পরামর্শ দিয়েছেন সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। একইসঙ্গে নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচন হলেই কেবল এর উদ্দেশ্য ও অর্জন সুনিশ্চিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘সৌজন্য বিনিময়’ অনুষ্ঠানে তার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার আগে এমন অভিব্যক্তি তুলে ধরেন তিনি।
দায়িত্ব গ্রহণের আড়াই বছরের মধ্যেই পদত্যাগ করল এই কমিশন। ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নেন সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ ভেঙে গেলে নব্বই দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে ভোটের আয়োজন না করলে ইসিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে। যেহেতু বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার রয়েছে এবং নির্বাচনের কোনো রূপরেখা নেই, সংবিধানও কার্যত অঘোষিতভাবে স্থগিত হয়ে পড়েছে তাই কমিশন পদত্যাগ করলো বলে মনে করছেন ইসি কর্মকর্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বিদায়ী সিইসি বলেন, বর্তমান ও অতীত থেকে আহরিত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও উপলব্ধি থেকে ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রস্তাবনা সরকারের সদয় বিবেচনার জন্য রেখে যাওয়া কর্তব্য মনে করছি। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সমরূপতার কারণে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (দলীয় ভিত্তিক) নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ ক্ষেত্র হতে পারে। সেই সাথে নির্বাচন চার বা আটটি পর্বে, প্রতিটি পর্বের মাঝে তিন থেকে পাঁচ দিনের বিরতি রেখে, অনুষ্ঠান করা ব্যবস্থাপনার দিক থেকে সহজ ও সহায়ক হতে পারে। আমাদের প্রবর্তিত অনলাইনে নমিনেশন দাখিল অব্যাহত রেখে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার অপটিমাইজ করতে পারলে উত্তম হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনিসহ তার কমিশনের সদস্যরা পদত্যাগ করার জন্য মনস্থির করেছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়ার জন্য পদত্যাগপত্রগুলো ইসি সচিবালয়ের সচিবের কাছে তারা জমা দিয়েছেন।
নিজের বক্তব্য পড়ে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন সিইসি। এ সময় নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর ও মো. আহসান হাবিব খান সঙ্গে ছিলেন। তবে বেগম রাশিদা সুলতানা ও মো. আনিছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন না। পদত্যাগ করে সবার আগেই ব্যক্তিগ গাড়িতে ইসি ভবন ছেড়ে বের হয়ে যান কাজী হাবিবুল আউয়াল। একই সঙ্গে বের হয়ে যান মো. আহসান হাবিব খান ও মো. আলমগীর।
তবে চুপিসারে ইসি ভবন ছেড়ে যাওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে পড়েন রাশিদা সুলতানা ও আনিছুর রহমান। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা দুজনের গাড়িতে জুতা নিক্ষেপ করে।