এবার উন্মুক্ত হলো বাংলাদেশীদের জন্য ইলেকট্রনিক অ্যাপোস্টিল সার্টিফিকেট ইস্যু করার পথ। এজন্য ই-এপিপি বা ইলেকট্রনিক অ্যাপোস্টিল প্রোগ্রাম পদ্ধতিতে ডকুমেন্টের সত্যতা ও সঠিকতা সার্টিফিকেটে বিদ্যমান কিউআর কোড দিয়ে বিশ্বের যেকোন স্থান থেকে যাচাই করা যাবে। এর ফলে এখন থেকে বিদেশগামী ছাত্র-ছাত্রী, পেশাজীবী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিদেশে ভর্তি ও চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব পাবলিক ডকুমেন্ট সনাতন পদ্ধতিতে সত্যায়িত করতে হতো, তা দ্রুততর, সহজ ও সুলভভাবে করতে পারবে।
এ জন্য বাংলাদেশ ‘দ্য কনভেনশন অন এবোলিশিং দ্য রিকোয়ারমেন্ট অব লিগালাইজেশন অব ফরেন পাবলিক ডকুমেন্ট’ বা অ্যাপোস্টিল কনভেনশন- ১৯৬১ এর পক্ষভুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। দ্য হেগ শহরে সোমবার (২৯ জুলাই) স্থানীয় সময় দুপুরে নেদারল্যান্ডস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত অ্যাপোস্টিল কনভেনশনে যোগদান অনুষ্ঠানে দেশের পক্ষে ‘ইন্সট্রুমেন্ট অব একসেশন’ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নেদারল্যান্ডসে।
এর ফলে দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন করা ডকুমেন্ট আর অন্য দেশে পুনরায় সত্যায়ন করা লাগবে না এবং প্রতি বছর বিদেশগামী বাংলাদেশিদের আনুমানিক ৫০০-৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নেদারল্যান্ডস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল মন্ত্রী ড. হাছানকে স্বাগত জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় তার বক্তৃতায় বাংলাদেশের লাখ লাখ নাগরিকদের জন্য এ চুক্তির প্রয়োজনীয়তা ও তাৎক্ষণিক সুবিধাদি ব্যাখ্যা করেন।
এ কনভেনশনে যোগদান বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ এবং এতে দেশের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, কারণ এর ফলে ই-এপিপি বা ইলেকট্রনিক অ্যাপোস্টিল প্রোগ্রাম পদ্ধতিতে সত্যায়ন করে ইলেকট্রনিক অ্যাপোস্টিল সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে যার সত্যতা ও সঠিকতা সার্টিফিকেটে বিদ্যমান কিউআর কোড দিয়ে বিশ্বের যেকোন স্থান থেকে যাচাই করা যাবে। এতে বিদেশগামী ছাত্র-ছাত্রী এবং পেশাজীবীদের বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও ভোগান্তি সম্পূর্ণ লাঘব হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান আরও বলেন, নিজ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা এপোস্টিল সার্টিফিকেট ব্যবহার করলে বিদেশি দূতাবাস বা বিদেশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিদেশি অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের সত্যায়নের জন্য শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে তাদের দ্বারস্থ হতে হবে না। এতে প্রতি বছর বিদেশগামী বাংলাদেশিদের আনুমানিক ৫০০-৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
বর্তমানে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ, চাকরির আবেদন, বিদেশে স্থায়ী হওয়া, বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনসহ নানাবিধ প্রয়োজনে বিদেশগামী ও বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের বিভিন্ন দলিলাদি (যেমন- অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন সনদ, বৈবাহিক সার্টিফিকেট ইত্যাদি) একাধিক কর্তৃপক্ষের সত্যায়নের প্রয়োজন হয়। দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সত্যায়নসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন শেষে সেবা প্রার্থীদের পুনরায় বিদেশি দূতাবাস, সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে সত্যায়নের জন্য উপস্থিত হতে হয়, যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ, শ্রমসাধ্য এবং ব্যয়বহুল।