ঢাকার মধ্য দিয়ে শুরু হলো দেশজুড়ে ফ্রিল্যান্সারদের মিলনমেলা ফ্রিল্যান্সার কনফারেন্স ২০২৩। গুলশানের সেলিব্রেটি কনভেনশন হলে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো এই মহাসম্মিলন। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ফ্রিল্যান্সারদের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার হাতিয়ার’ উল্লেখ করে মন্ত্রী জানালেন, দেশে এখন ১০ লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। এরা বিশ্বের সফল ফ্রিল্যান্সারদের ৬৪ শতাংশ। তারা দেশে বসেই বছরে শত কোটি টাকার রেমিটেন্স আনছে।
তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব বাজারে দেশের উন্নয়নে ফ্রিল্যান্সাররা অনেক অবদান রাখছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে এসব তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। এর ধারাবাহিকতায় ফ্রিল্যান্সাররা বেশি বেশি আয় করছেন। ফ্রিল্যান্সারদের উপার্জিত অর্থে আমাদের রেমিট্যান্স দিন দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে। তাই ফ্রিল্যান্সারদের তাদের অর্জিত বিদেশি আয় নির্ধারিত অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে দেশে আনলে এর বিপরীতে ৪ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। দেশের প্রতিটি ব্যাংককে এই ৪ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে সংস্থার সভাপতি ডা. তানজিবা রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিএফডিএস এর জেলা কমিটির সদস্য এবং নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সারসহ প্রায় ৫০০ ফ্রিল্যান্সার অংশ নেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে প্রধান নির্বাহী মাসরুর আরেফিন বলেন, আমরা ফ্রিল্যান্সারদের সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়ে আলাদা কার্ড করেছি। এর মাধ্যমে তারা নানা সুযোগ-সুবিধাদি ও ব্যাকিং ঋণ পাবেন। ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। আর ক্রেডিট কার্ডে কোন চার্জ নেওয়া হবে না।
অনুষ্ঠানে বিএফডিএস প্রতিষ্ঠাতা ও সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন জয় বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের সুখে-দুঃখে সবসময় আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি। তাদের জীবনমান উন্নয়নসহ মেধা ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতিতে দেশকে এগিয়ে নিতে নিরলস কাজ করে চলেছে বিএফডিএস।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমান বলেন, বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিংয়ের বাজার দেড় ট্রিলিয়ন ডলার। এ বাজারে কাজ করছে অননাইন ও অফলাইন মিলিয়ে প্রায় সাড়ে দশ লাখ বাংলাদেশি। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কর্মী হিসেবে আমরা বিশ্বের দ্বিতীয়। অথচ আয়ের দিক থেকে ৮ম। আমদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্রিল্যান্সারদের সামাজিক স্বীকৃতি দিয়েছেন। এই ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ডের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা ব্যাংকিং ঋণসহ অন্যান্য সুবিধাদি পাচ্ছেন। ঘরে বসে নারীরাও ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের এই আন্তর্জাতিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কর্মরত রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অনেক সমস্যা রয়েছে। বিএফডিএস এসব সমস্যা সমাধানে সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। তাদের দক্ষতা উন্নয়ন, আর্থিক, সামাজিক ব্যবস্থাপনা বাধাগুলো নিরসনে সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। দেশজুড়েই আমরা এই কনফারেন্স করবো।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন লংকা বাংলার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট খোরশেদ আলম, আইটি পল্লী সভাপতি নাজমুল করিম ভূঁইয়া, বিআইএজেএফ সভাপতি নাজনীন নাহার, বেসিস সহ সভাপতি আবু দাউদ খান প্রমুখ।
ইফতার অনুষ্ঠানের আগ পর্যন্ত ফ্রিল্যান্সারদের বিডিং থেকে শুরু করে সুরক্ষিত উপাদেয় রেমিটেন্স আয় এবং সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তির বিষয়ে আলোকপাত করে নেয়া হয় বিভিন্ন সেশন।