ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন শনিবার বার্ষিক বাজেটে মোবাইল ফোন উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপকরণের ওপর শুল্ক বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তে স্থানীয় উৎপাদন আরও বাড়বে এবং এতে অ্যাপল ও শাওমির মতো কোম্পানিগুলো লাভবান হবে। খবর রয়টার্স।
গত ছয় বছরে ভারতের ইলেকট্রনিকস উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪ সালে ১১৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, ফলে দেশটি এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠেছে।
২০২৪ সালে ভারতের স্মার্টফোন বাজারে রাজস্বের দিক থেকে অ্যাপল ২৩% শেয়ার নিয়ে শীর্ষে ছিল, এরপর স্যামসাং ২২% শেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট জানিয়েছে।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে মোবাইল ফোন সংযোজনের জন্য ব্যবহৃত প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড অ্যাসেম্বলি, ক্যামেরা মডিউলের কিছু অংশ এবং ইউএসবি ক্যাবলের মতো উপকরণগুলোর শুল্ক বাতিল করা হয়েছে, যা আগে ২.৫% ছিল।
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তার মধ্যে এই শুল্ক হ্রাস ভারতের মোবাইল উৎপাদন খাতকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা ফার্স্ট নীতির কারণে উৎপাদন খাত যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা ও চীন-মার্কিন বাণিজ্য উত্তেজনার সুযোগ নিতে চাইছে ভারত।
দেশটির আইটি মন্ত্রণালয় আগেই সতর্ক করেছিল যে, শুল্ক হ্রাস করা না হলে ভারত স্মার্টফোন রপ্তানির দৌড়ে চীন ও ভিয়েতনামের কাছে পিছিয়ে পড়তে পারে।
গত বছর বাজেট ঘোষণার সময় অর্থমন্ত্রী শুল্ক কাঠামো পর্যালোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যাতে শুল্ক ব্যবস্থা সহজতর ও ব্যবসার জন্য সুবিধাজনক হয়। নতুন শুল্ক পর্যালোচনার উদ্দেশ্য ছিল “বিপরীত শুল্ক কাঠামো” দূর করা, যেখানে কাঁচামাল বা মধ্যবর্তী পণ্যের শুল্ক চূড়ান্ত পণ্যের তুলনায় বেশি থাকে।
ভারতের জটিল শুল্ক ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে এবং এটি প্রায়ই বাণিজ্য বিরোধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এই সমস্যা অনেকাংশে কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ডিবিটেক/বিএমটি